বৃহস্পতিবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া অর্থনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবুল বারকাতের মুক্তি এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের বিচারিক হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণ এশিয়া গণতান্ত্রিক ফোরাম (SADF)।
শুক্রবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বরাবরে দেয়া এক চিঠিতে এই আহ্বান জানান দক্ষিণ এশিয়া গণতান্ত্রিক ফোরামের নির্বাহী পরিচালক পাওলো কাসাকা।
চিঠিতে পাওলো কাসাকা বলেন, ‘আমি ড. আবুল বারকাতের গ্রেপ্তারের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। তিনি একজন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, একাডেমিক এবং মুক্তিযোদ্ধা। সন্দেহজনক অভিযোগের ভিত্তিতে তার এই গ্রেপ্তার একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ঘটনা, যা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ভিন্নমত দমন করতে ব্যবহারের ইঙ্গিত দেয়।’
চিঠিতে বলা হয়, ‘ড. আবুল বারকাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির সভাপতি। তিনি বেদখল সম্পত্তি আইন এবং পরিত্যক্ত সম্পত্তি আইন নিয়ে তার পথপ্রদর্শক গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এই দুটি আইন ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ বিষয়ে তার বিশ্লেষণ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যাপক এবং নির্ভরযোগ্য, যা ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ড. আবুল বারকাত এই বিষয়ে শীর্ষস্থানীয় গবেষকই নন, তিনিই একমাত্র গবেষক যিনি এই আইনের সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা করেছেন। তার কাজ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় এবং শাসন ব্যবস্থার কাঠামোগত অবিচার মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।’
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এমন একজন সম্মানিত বুদ্ধিজীবীকে গ্রেপ্তার বিচারিক ও প্রশাসনিক অস্ত্রায়নের একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ বলে মনে হচ্ছে, যার উদ্দেশ্য মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করে দেওয়া। এটি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ড. আবুল বারকাতের অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য এবং একাডেমিক স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জোর আহ্বান জানাচ্ছি। বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসন যেন রাজনৈতিক প্রতিশোধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’