ড. ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে স্বৈরাচারী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেনঃ মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ফেলো মাইকেল রুবিন

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরাসরি ‘স্বৈরাচার’ আখ্যা দিয়ে তাঁর ওপর অবিলম্বে ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা (Sanctions) আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট’ (AEI)-এর সিনিয়র ফেলো মাইকেল রুবিন। প্রভাবশালী গণমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট-এ (৪ অক্টোবর, ২০২৫) প্রকাশিত এক বিস্ফোরক মতামতধর্মী নিবন্ধে তিনি এই আহ্বান জানান।

ভবিষ্যতের কাল্পনিক প্রেক্ষাপট: রুবিনের দাবি

“বাইডেনের ব্যর্থ বাংলাদেশ কৌশল দ্বিগুণ করা উচিত নয়” (Why Trump Should Not Double Down on Biden’s Failing Bangladesh Strategy) শিরোনামের এই নিবন্ধটি ২০২৫ সালের একটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে লেখা। এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের পর ড. ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং পরবর্তীতে স্বৈরাচারী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।

রুবিন দাবি করেন, জো বাইডেন প্রশাসন ড. ইউনূসের ক্ষমতা গ্রহণকে “গণতান্ত্রিক পরিবর্তন” বলে স্বাগত জানিয়ে যে নীতি নিয়েছিল, তা ছিল একটি “ব্যর্থ নীতি“। তাঁর মতে, ছাত্র আন্দোলনকে আপাতদৃষ্টিতে স্বতঃস্ফূর্ত মনে হলেও এর পেছনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই (ISI) এবং কাতার ও তুরস্কের অর্থায়ন থাকতে পারে, যা মার্কিন প্রশাসন অনুধাবন করতে পারেনি।

ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

মাইকেল রুবিন ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন কাল্পনিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন:

  • স্বৈরাচার ও প্রতিশোধ: ইউনূস ‘সংস্কারের’ নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছেন এবং স্বৈরশাসন কায়েম করেছেন।
  • দমন-পীড়ন: তিনি ধর্মনিরপেক্ষ নেতা, সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের জন্য কারাগার ব্যবহার করছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন বানোয়াট মামলা দিচ্ছেন।
  • উগ্রপন্থীদের মুক্তি: মানবাধিকারের অজুহাতে কারাগার থেকে ইসলামপন্থী ও সন্ত্রাসীদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। রুবিনের মতে, এটি মূলত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের জন্য জায়গা খালি করার কৌশল।
  • সংখ্যালঘু নির্যাতন: ইউনূসের সমর্থকরা বাংলাদেশের হিন্দু ও খ্রিস্টানদের মতো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে।
  • নোবেল পুরস্কারের অপব্যবহার: রুবিন অভিযোগ করেন, ড. ইউনূস তাঁর নোবেল শান্তি পুরস্কারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ঘৃণা ও প্রতিশোধের রাজনীতি করছেন।

ট্রাম্প প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার পরামর্শ

মাইকেল রুবিন ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনকে ইউনূসের বিষয়ে কঠোর হওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

  1. ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা: বিরোধী নেতা ও সাংবাদিকদের কারাবন্দী করার অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।
  2. অভ্যুত্থান হিসেবে স্বীকৃতি: বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তনকে একটি “ধীর গতির অভ্যুত্থান” হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।
  3. জামায়াতকে সন্ত্রাসী ঘোষণা: ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’কে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করা।
  4. শেখ হাসিনাকে স্বীকৃতি: একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত শেখ হাসিনাকেই বাংলাদেশের বৈধ নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।

রুবিন নিবন্ধের শেষে সতর্ক করে বলেন, এই পদক্ষেপগুলো নিতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ দ্রুত “অসহিষ্ণুতা ও ইসলামি উগ্রপন্থার আঁতুড়ঘরে” পরিণত হবে।

সুত্রঃ firstpost.com/opinion/

Tags :

International News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025