ইউটিউব বনাম নেটফ্লিক্স যুদ্ধে আমির খানকে ১২৫ কোটির বিশাল প্রস্তাব!

নেটফ্লিক্স এবং ইউটিউবের ডিজিটাল পরিবেশনার যুদ্ধ নাটকীয় মোড় নিয়েছে। স্ট্রিমিং জায়ান্ট নেটফ্লিক্স এবার আমির খানের বহুল প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘সিতারে জমিন পর’-এর ডিজিটাল স্বত্ব অধিগ্রহণের জন্য প্রাথমিক প্রস্তাবের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি অর্থ প্রস্তাব করেছে।

নেটফ্লিক্স এখন ছবিটির জন্য ১২৫ কোটি রুপির প্রস্তাব করেছে। তাদের মূল ৫০ থেকে ৬০ কোটি রুপির প্রস্তাবের তুলনায় যা এক বিশাল উল্লম্ফন। ইউটিউব পে-পার-ভিউ (Pay-Per-View) মডেলের প্রতি আমীর খানের অবিরাম সমর্থনকে টেক্কা দিতে তারা এই পদক্ষেপ নিলো।

নজিরবিহীন এই প্রস্তাব ভারতের দ্রুত বিকাশমান ডিজিটাল বিনোদন অঙ্গন নিয়ন্ত্রণের সংঘাতকে সামনে নিয়ে এসেছে। আমির খান তার স্বাধীনচেতা মানসিকতা এবং প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে বিপণন কৌশল বেছে নেওয়ার জন্য সুপরিচিত। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলির প্রতি তার অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে আসছেন। গত এক বছর ধরে, এই সুপারস্টার তার চলচ্চিত্রগুলি সরাসরি ইউটিউবের মাধ্যমে মুক্তি দেওয়ার ধারণাকে সমর্থন করে আসছেন। তার যুক্তি হলো, এই প্ল্যাটফর্মটি যেসব এলাকায় পেইড স্ট্রিমিং সাবস্ক্রিপশন ততটা প্রচলিত নয়, সেসব এলাকায় চলচ্চিত্রের প্রবেশাধিকার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিবে।

চলতি বছরের শুরুর দিকে একটি সম্মেলনে আমির বলেছিলেন, “এই মডেল ব্যয়বহুল মাসিক সাবস্ক্রিপশনের বাধা দূর করে, দর্শকদের নামমাত্র ফিতে নতুন চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ করে দিবে।” তিনি জোর দিয়েছিলেন যে এই ধরনের মুক্তি দর্শক ব্যাপ্তি বাড়াবে। এর ফলে স্মার্টফোন আছে এমন যেকোনো দর্শক চাইলেই চলচ্চিত্রটি দেখতে পারবেন।

আলোচনার সাথে জড়িত সূত্রগুলি ইঙ্গিত দেয় যে, খানের এই সাহসী অবস্থান স্ট্রিমিং শিল্পে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। একজন মার্কেটিং এক্সপার্ট মন্তব্য করেছেন, “‘সিতারে জমিন পর’-এর ইউটিউব পে মডেলে চলে যাওয়া পুরো বিপণন ব্যবস্থাকে ব্যাহত করতে পারে। যদি আমির এটি সফলভাবে করতে পারেন, তবে এটি আরও চলচ্চিত্র নির্মাতাদের উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সরাসরি দর্শকদের কাছে যেতে উৎসাহিত করবে। এর অর্থ হবে নেটফ্লিক্স এবং অ্যামাজনের মতো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলিকে এখন এমন একটি ফর্ম্যাটের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে যা সস্তা, সহজলভ্য এবং এক্সক্লুসিভ নয়।”

তিনি আরও যোগ করেন, “নেটফ্লিক্সের জন্য, ‘সিতারে জমিন পর’ অধিগ্রহণ কেবল ছবিটির সম্ভাবনার বিষয় নয়। এটি তাদের নিজেদের অবস্থান রক্ষা করার বিষয়। আমিরের দর্শকপ্রিয়তা এবং প্রকল্পটির সম্ভাবনা এটিকে ওটিটি কৌশলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় পরিনত করেছে।”

কিছুদিনের মধ্যেই জানা যাবে, আমির নেটফ্লিক্সের দেওয়া বিশাল প্রস্তাব মেনে নেবেন নাকি চলচ্চিত্র বিতরণে নিজের বিপ্লবী দৃষ্টিভঙ্গিতেই অটল থাকবেন। আমির যদি ইউটিউব পে-এর পথ বেছে নেন, তবে এটি মূলধারার বলিউড সিনেমার অর্থনীতি পুনরায় সংজ্ঞায়িত করতে পারে। হয়তো এটি ভারতে চলচ্চিত্র বিতরণের ডিজিটাল মানচিত্রকে নতুন করে আঁকতে পারে। এটি শুধু একটি সিনেমা নয় আর, বিনোদন শিল্পে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের ইঙ্গিত নিয়ে আসা প্রকল্প। তাই সবার দৃষ্টি এখন আমিরের ‘সিতারে জমিন পর’ চলচ্চিত্রের দিকেই।

Tags :

Entertainment Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

 People’s Agenda

Quick Links

Copyrights are reserved by NE News © 2025, Jun 15