পৃথিবীর স্বাস্থ্য ও জলবায়ু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে আসছেন। পটসডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চ (PIK) প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদন ‘প্ল্যানেট হেলথ চেক ২০২৫’ অনুযায়ী, পৃথিবীর জলবায়ু স্থিতিশীলতা, জীবনধারণের উপযোগী পরিবেশ এবং সহনশীলতার মাপকাঠিতে নির্ধারিত নয়টি ‘গ্রহসীমা সূচক’-এর মধ্যে সাতটি ইতোমধ্যে বিপজ্জনক মাত্রা অতিক্রম করেছে।
২০০৯ সালে বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো প্ল্যানেটারি হেলথ চেকের ধারণা দেন। এতে নয়টি সূচক নির্ধারণ করা হয়, যা পৃথিবীর জীবনধারণে সহায়ক ব্যবস্থাগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই সূচকগুলো হলো—
জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য হ্রাস, ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন, মিষ্টি পানির ব্যবহার, বায়ুমণ্ডলের অ্যারোসল, সমুদ্রের অম্লতা, রাসায়নিক দূষণ ও নাইট্রোজেন ও ফসফরাস চক্র। এসব সূচক ব্যাখ্যা করে মানুষকে কী ধরনের কার্যক্রম এড়িয়ে চলতে হবে, যাতে পৃথিবীর পরিবেশ অতিরিক্ত চাপের মুখে না পড়ে।
সীমা অতিক্রমের ইতিহাস
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ২০০৯ সালেই তিনটি সূচক নিরাপদ সীমা অতিক্রম করে। ২০১৫ সালে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় চারটিতে। ২০২৩ সালে তা হয় ছয়টি। আর ২০২৫ সালের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, সাতটি সূচক ইতোমধ্যেই ভয়াবহ মাত্রা অতিক্রম করেছে।
গবেষকদের উদ্বেগ
পিআইকের গবেষক বরিস সাকশেভস্কি বলেন, এখন অনেক সূচক স্বাভাবিক সীমার বাইরে চলে গেছে। এর মানে হলো, পৃথিবী একটি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
তিনি পরিস্থিতিকে তুলনা করেছেন এমন এক রোগীর সঙ্গে, যার শরীরে উচ্চ প্রদাহ, উচ্চ কোলেস্টেরল, দুর্বল লিভার ও ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুস—সব একসঙ্গে খারাপ হচ্ছে এবং একে অপরকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
আছে আশার আলো
পরিস্থিতি সংকটজনক হলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এখনো সময় রয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার, পরিবেশবান্ধব নীতি, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে পৃথিবীকে আবারও সুস্থ পথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।