ভোটের জরিপে এগিয়ে বিএনপি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে জনগণের ভাবনা জানতে চালানো একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভিশন কনসাল্টিং। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪০ শতাংশ ভোটার মনে করেন সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি সরকার গঠন করবে। আর ২৮ দশমিক ১ শতাংশ ভোটার মত দিয়েছেন জামায়াতের পক্ষে।

জরিপে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ মনে করেন দলটিকে সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে ৪৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলেছেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আগে বিচার হওয়া দরকার।

বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় আর্কাইভস ভবনের মিলনায়তনে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। সংস্থাটি জানায়, ‘জনগণের নির্বাচন ভাবনা’ নিয়ে দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় পর্বের জরিপের ফলাফল এটি। এতে অংশ নেন ১০ হাজার ৪১৩ জন। তাদের মধ্যে ৬৯ দশমিক ৫ শতাংশ শহরের ও ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ গ্রামের ভোটার। ৬৪ জেলায় ৫২১টি প্রাইমারি স্যাম্পলিং ইউনিটে জরিপটি চালানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন ইনোভিশন কনসাল্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাইয়াত সরওয়ার। পরে ফলাফলের ওপর আলোচনায় অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ এম শাহান, ভয়েস ফর রিফর্ম এর সহ-সমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জরিপের ফলাফলে অংশগ্রহণকারীদের রাজনৈতিক পছন্দ ও নির্বাচনী দৃষ্টিভঙ্গি এবং মনোভাব ও সরকারের প্রতি প্রত্যাশার কথা ফুটে উঠেছে।

ভবিষ্যৎ সরকারের কাছে প্রত্যাশা

জরিপ বলছে, ভোটারদের উদ্বেগ অর্থনীতি থেকে সরে নিরাপত্তা ও জবাবদিহিতার দিকে গেছে। যদিও পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দিতে বলেছেন ৫৪ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটার। তবে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য পরবর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা সবচেয়ে বেশি- ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

উত্তরদাতাদের বড় অংশ চান ভারত (৭২.২%) ও পাকিস্তানের (৬৯.০%) সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে। কিছু সংখ্যক চান পাকিস্তানের তুলনায় ভারতের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করতে।

ভোটের সিদ্ধান্ত

প্রার্থীর যোগ্যতা ভোটের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে করেন ৬৫.৫ শতাংশ। এর পরে আছে প্রার্থীর আগের কর্মকাণ্ড (১৫.৮৭%) এবং দলের নির্বাচনী প্রতীক (১৪.৭৬)। লক্ষণীয়ভাবে, দলের ইশতেহার সবচেয়ে কম গুরুত্ব পায় (৫%)। প্রজন্মের ভিত্তিতে জেনারেশন জেড (জেন-জি) আগের প্রজন্মের তুলনায় প্রার্থীর কর্মকাণ্ডকে বেশি মূল্য দেয়। আঞ্চলিক দিক থেকে, চট্টগ্রামের অংশগ্রহণকারীরা প্রার্থীর যোগ্যতার পরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন দলীয় প্রতীকে (১৯ শতাংশ)।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, যারা ভোটদানের অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে ১৯.৬৮ শতাংশ (১৪.০৭% থেকে)। বিএনপি (৪১.৩%) ও জামায়াতে ইসলামীর (৩০.৩%) অবস্থা স্থিতিশীল। এ ছাড়া, এনসিপি ৪.১০ ও ইসলামী আন্দোলন ৩.১০ শতাংশ। তবে যদি আওয়ামী লীগ অংশ না নেয়, সেক্ষেত্রে বিএনপি (৪৫.৬%) ও জামায়াতে ইসলামী (৩৩.৫%) প্রধান উপকারভোগী হবে। এ ছাড়া, একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটার (৮.৩%) ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025