ভাঙা হলো ভাস্কর্য, সমালোচনার ঝড়

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি প্রশাসনের নির্দেশে ভেঙে ফেলা হয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন হওয়া এই ভাস্কর্যটি কবির একটি গানের নামানুসারে তৈরি করা হয়েছিল এবং এটি স্থাপন করা হয় বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ ও পুরাতন কলা অনুষদ ভবনের মাঝখানের পুকুরপাড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে চার কোটির বেশি ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পুকুরগুলোর সৌন্দর্যবর্ধনের কাজের অংশ হিসেবেই নির্মিত হয় ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি। ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছিলেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। তবে ৫ আগস্ট প্রশাসনিক পটপরিবর্তনের পর নতুন প্রশাসনের নির্দেশেই এটি ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র পুকুরের সৌন্দর্যবর্ধনের অংশ হিসেবে নির্মিত ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি ছিল নান্দনিক স্থাপনাগুলোর অন্যতম। প্রশাসন চাইলে নতুনভাবে পরিকল্পনা করে এটি রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নিতে পারতো।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় চারুশিল্প পর্ষদের সভাপতি মো. রাজন বলেন, এই ভাস্কর্যটি যখন নির্মাণ করা হয়েছিল তখনই এটা নিয়ে বিতর্ক ছিল। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এভাবে ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাটা আমাদের মতো শিল্পপ্রেমীরা মেনে নিতে পারছে না।

তিনি আরও জানান, ভাস্কর্যটি ভেঙে না ফেলে এটাকে আরও কীভাবে সৌন্দর্যমণ্ডিত করা যায় এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভাবা উচিত ছিল।

ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সাম্প্রদায়িক চিন্তা করে যদি ভাস্কর্য ভাঙা হয়ে থাকে তবে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন দফতরের পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান জানান, বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভাস্কর্যটি ভাঙা হয়েছে। সিদ্ধান্ত এসেছে উপাচার্যের পক্ষ থেকে।

এ বিষয়ে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করা ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী বলেন, এ বিষয়ে অনেক আগেই ডিনবৃন্দ ও সবাইকে নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এটা সম্ভবত সেই সিদ্ধান্তের কারণেই হচ্ছে। তখন তো অনেকগুলো বিতর্কিত কর্মকাণ্ড হয়েছিল, কেউ কেউ ভাস্কর্যটি নিয়ে তীব্রভাবে আপত্তি জানিয়েছিল। ফলে ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

 People’s Agenda

Quick Links

Copyrights are reserved by NE News © 2025, Jun 18