ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়াকে চাপ দিতে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করতে ভারতের একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময় এই মন্তব্য করেন। ইউক্রেন সংঘাত নিরসনে ইউরোপের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই এই আলোচনা হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলার পর উরসুলা ভন ডের লেয়েন ‘X’ (সাবেক টুইটার)-এ একটি পোস্টে জানান, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে নয়াদিল্লির অব্যাহত যোগাযোগকে ব্রাসেলস ‘আন্তরিকভাবে স্বাগত’ জানায়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই যুদ্ধের বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিণতি রয়েছে এবং এটি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করছে, যা ‘পুরো বিশ্বের জন্য ঝুঁকি’স্বরূপ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) প্রধান আরও জানান যে, ২০২৬ সালে অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী EU-ভারত শীর্ষ সম্মেলনে উভয় পক্ষ একটি যৌথ কৌশলগত এজেন্ডা গ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, এই বছরের শেষ নাগাদ দীর্ঘদিনের ঝুলে থাকা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (Free Trade Agreement) আলোচনা শেষ করার বিষয়েও তিনি EU-এর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “এটি অর্জন করতে হলে এখন থেকেই অগ্রগতি প্রয়োজন।”

মার্কিন শুল্ক আরোপ এবং ট্রাম্পের অভিযোগ
উরসুলা ভন ডের লেয়েনের এই মন্তব্যের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের বিরুদ্ধে ব্যাপক শুল্ক আরোপ করেছেন। ভারতের পণ্যের ওপর তিনি ২৫% পারস্পরিক শুল্ক (reciprocal duty) আরোপ করেছেন। এর পাশাপাশি, ভারতের রাশিয়ান তেল কেনার কারণে অতিরিক্ত ২৫% শুল্কও আরোপ করেছেন।
ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন যে, ভারত ছাড়কৃত মূল্যে রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল কিনে ‘রাশিয়ার ইউক্রেনের ওপর প্রাণঘাতী হামলায় ইন্ধন জোগাচ্ছে’, যদিও ওয়াশিংটন এখন পর্যন্ত মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের মার্কিন পণ্যের শুল্ক কমানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এটিকে ‘খুব দেরি হয়ে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি দুই দেশের সম্পর্ককে ‘একতরফা বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করে বলেন, এতে অন্যায়ভাবে নয়াদিল্লি লাভবান হচ্ছে।