নেতানিয়াহুর ভাষণ : ওয়াকআউট করল যেসব দেশ

ফিলিস্তিনে চলমান আগ্রাসনের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী নিন্দা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মধ্যেও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সাধারণ পরিষদের চতুর্থ দিনে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা তাদের আসন ত্যাগ করে অধিবেশনকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় অধিবেশনকক্ষে উপস্থিত অনেকেই হাততালি দিয়ে তাদের সমর্থন জানান। পরিষদের সভাপতি শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানালেও তাতে তেমন সাড়া মেলেনি।

এ সময় অনেক দেশের প্রতিনিধি প্রতিবাদ জানিয়ে অধিবেশনকক্ষ বর্জন (ওয়াকআউট) করেন। নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিরাও অধিবেশনকক্ষে অনুপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ড. ইউনূস তার ভাষণে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

ওয়াশিংটন পোস্টের তথ্য অনুযায়ী, নেতানিয়াহুর প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ৫০টিরও বেশি দেশের ১০০ জনেরও বেশি কূটনীতিক হল থেকে বেরিয়ে যান। যারা চেয়ারে বসে ছিলেন তাদের অনেককে হাততালি দিয়ে উদ্‌যাপন করতে দেখা যায়। কয়েকটি গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের জন্য সংরক্ষিত চেয়ারগুলোও ফাঁকা।

সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, শুধু আরব ও মুসলিম নেতারাই অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেননি, তাদের সঙ্গে সঙ্গে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান আফ্রিকা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরাও।

এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, আমি সবসময় মানুষকে আশার বাণী শুনিয়েছি, কখনো ভয় দেখিয়ে কিছু করা আমি সমর্থন করিনি। কিন্তু আজ আমাকে সেখান থেকে সরে এসে ভয়ংকর কিছু কথা বলতে হচ্ছে। আজ আমি সতর্ক করছি চরম জাতীয়তাবাদ, অন্যের ক্ষতি হয় এমন ভূরাজনীতি এবং অন্যের দুর্ভোগ ও পীড়নের প্রতি ঔদাসীন্য বহু দশকের পরিশ্রমে আমরা যে অগ্রগতি অর্জন করেছি তা ধ্বংস করে দিচ্ছে।

ড. ইউনূস বলেন, সবচেয়ে মর্মান্তিক চিত্র আমরা দেখছি গাজায়। শিশুরা না খেয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করছে, বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে, হাসপাতাল, স্কুলসহ একটি গোটা জনপদ নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হচ্ছে। জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সঙ্গে আমরাও একমত যে আমাদের চোখের সামনেই একটি নির্বিচার গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে; আমাদের দুর্ভাগ্য যে মানবজাতির পক্ষ থেকে এর অবসানে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।

Tags :

Rajib Ahmed

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025