কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আবারও আলোচনায় এসেছে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার প্রসঙ্গ। তবে এবারও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কাশ্মীর বিষয়ে কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা নয়।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক ফোনালাপে মোদি জোর দিয়ে বলেন, কাশ্মীরে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রী পরে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
বিক্রম মিশ্রী জানান, মোদি ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বলেছেন, সামরিক সংঘাত বন্ধের আলোচনা হয়েছে শুধুমাত্র ভারত ও পাকিস্তানের সেনা চ্যানেলের মাধ্যমে, কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ ছাড়াই। এছাড়া ওই সময় ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও কোনো আলোচনা হয়নি।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের চেষ্টা করছে দিল্লি, যার সময়সীমা শেষ হচ্ছে ৯ জুলাই। এ অবস্থায় ট্রাম্পের এমন মন্তব্যে ভারতের কূটনৈতিক অঙ্গনে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
ভারতের দাবি, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী এই হামলার পেছনে দায়ী। পরে মে মাসে ভারত পাকিস্তানের ভেতরে ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি তে বিমান হামলা চালায়, যার পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও সামরিক অভিযান চালায়।
এর প্রেক্ষিতে ১০ মে ট্রাম্প ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই দেশ একটি ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি পোস্ট দিয়ে বলেন, “আমি তোমাদের দু’জনের সঙ্গে কাজ করবো, যাতে এক হাজার বছরের পরে হলেও কাশ্মীর সমস্যার সমাধান আসে।”
তবে ভারত আগের অবস্থানে অনড়- কাশ্মীর একটি অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং যা নিয়ে কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চলবে না। ভারতের অবস্থান, দ্বিপাক্ষিকভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা থাকলেও সেটি হবে সম্পূর্ণভাবে ভারতের শর্তে এবং ভারতীয় সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রেখে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের প্রকাশ্য মধ্যস্থতার প্রস্তাব এবং ভারত ও পাকিস্তানকে সমানভাবে মূল্যায়ন করার প্রবণতা দিল্লির দৃষ্টিতে একটি স্পর্শকাতর বিষয়। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য আলোচনায় বড় প্রভাব পড়বে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।