ট্রাম্প-মাস্ক মুখোমুখি : ক্ষমতা ও প্রভাবের লড়াই

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির অন্যতম শক্তিশালী জুটিতে ভাঙন ধরেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার নির্বাচনী সহযোগী টেক-জায়ান্ট ইলন মাস্ক এখন মুখোমুখি। সপ্তাহব্যাপী স্নায়ুযুদ্ধ এবার প্রকাশ্যে। রীতিমতো একে অন্যকে হুমকি, বাক-আক্রমণ শুরু করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইলন মাস্ক তাদের নিজ নিজ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তীব্র বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রযুক্তি উদ্যোক্তা মাস্কের বিভিন্ন সরকারি চুক্তি বাতিলের ইঙ্গিত দেন। অপরদিকে মাস্ক দিনব্যাপী একের পর এক পোস্ট দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তীব্র আক্রমণাত্মক হয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত বলে মন্তব্য করেন। এ ছাড়া ট্রাম্পের কাজকে জঘন্য বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মাস্ক।

বৃহস্পতিবারের এই নাটক শুরু হয় যখন ট্রাম্প মাস্কের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রযুক্তি উদ্যোক্তা মাস্কের প্রতি খুবই হতাশ তিনি। কারণ সম্প্রতি ট্রাম্পের এজেন্ডা বিলের তীব্র সমালোচনা করেছেন মাস্ক।

ট্রাম্প ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইলন এবং আমার মধ্যে দারুণ সম্পর্ক ছিল। আমি জানি না এটি আর থাকবে কি না।’ এর ফলে মনে হচ্ছে, মাস্কের বিশেষ সরকারি কর্মচারী হিসেবে শেষ দিনে দুজনের মধ্যে উচ্ছ্বাসপূর্ণ প্রশংসা বিনিময়ের মাত্র এক সপ্তাহ পর সব শেষ হয়ে যাচ্ছে।

এর কিছুক্ষণ পরেই মাস্ক তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ জবাব দেন। তিনি ছাড়া ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিততে পারতেন না- এই মন্তব্যটি প্রেসিডেন্টকে আরও ক্ষুব্ধ করে এবং দুজনের মালিকানাধীন দুটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সংঘাত বাকযুদ্ধে রূপ নেয়।

মাস্ক বলেন, আমি না থাকলে ট্রাম্প নির্বাচনে জিততে পারতেন না। ডেমোক্র্যাটরা হাউস নিয়ন্ত্রণ করত। আর রিপাবলিকানরা সিনেটে ৫১-৪৯ এ থাকত।

মাস্ক মঙ্গলবার প্রথমে এই প্রকাশ্য বিরোধ শুরু করেন। তিনি কর, ব্যয় কাটছাঁট, জ্বালানি এবং সীমান্ত সংক্রান্ত একটি বিশাল জিওপি বিলকে “জঘন্য কদর্যতা” বলে আখ্যায়িত করেন। তার মতে এ ধরনের কাজ ঘাটতি ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেবে। গত মাসে এই বিলটি হাউসে পাস হয় এবং বর্তমানে সিনেটে বিবেচনাধীন।

প্রযুক্তি উদ্যোক্তা মাস্ক স্পষ্ট করেছেন, তিনি এটি বাতিল করতে বা রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের এটি উল্লেখযোগ্যভাবে পুনর্লিখন করতে বাধ্য করতে চান।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মাস্কের প্রাথমিক আক্রমণের পর থেকে ট্রাম্প এবং মাস্কের মধ্যে কোনো কথা হয়নি। যা হয়েছে তা কেবল সোশ্যাল মিডিয়ায় কাদা ছোড়াছুড়ি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট এক বিবৃতিতে বলেন, ইলনের কাছ থেকে দুর্ভাগ্যজনক আচরণ আসছে। তিনি ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এর প্রতি অসন্তুষ্ট। কারণ এতে তার পছন্দের নীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত নেই। প্রেসিডেন্ট এই ঐতিহাসিক আইনটি পাস করতে এবং আমাদের দেশকে আবার মহান করতে মনোযোগী।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

 People’s Agenda

Quick Links

Copyrights are reserved by NE News © 2025, Jun 15