প্রত্যেক মার্কিনিকে ২ হাজার ডলার দেবেন ট্রাম্প

প্রত্যেক মার্কিন নাগরিককে ২ হাজার ডলার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রশাসনের শুল্ক রাজস্ব থেকে এ অর্থ দেওয়া হতে পারে। জনসমর্থন পুনরুদ্ধারের জন্য এমন রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১০ নভেম্বর) দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, প্রতি ব্যক্তিকে অন্তত ২,০০০ ডলার দেওয়া হবে। যারা শুল্কের বিরোধিতা করছে, তারা ‘বোকার মতো আচরণ করছে! তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অবশ্য কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।

এর আগে, মিজৌরির রিপাবলিকান সিনেটর জশ হাওলি চলতি বছরের শুরুর দিকে এক বিল উত্থাপন করেছিলেন। এ বিলে প্রায় সব আমেরিকান ও তাদের শিশুদের জন্য ৬০০ ডলারের শুল্ক ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়।

ওই সময়ে হাওলি বলেছিলেন, বাইডেন প্রশাসনের চার বছরের নীতিতে আমেরিকান পরিবারগুলোর সঞ্চয় ও জীবিকা ধ্বংস হয়েছে। তাই তারা কর ফেরতের অধিকার রাখে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট আগস্টে জানিয়েছিলেন, প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য হলো জাতীয় ঋণ কমানো, যা বর্তমানে ৩৮.১২ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি বলেন, শুল্ক থেকে আদায় করা অর্থ প্রথমে ঋণ পরিশোধে ব্যবহৃত হবে, নাগরিকদের চেক দেওয়ার জন্য নয়।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের সেপ্টেম্বর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে মোট ১৯৫ বিলিয়ন ডলার শুল্ক রাজস্ব আদায় হয়েছে। অন্যদিকে অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২,০০০ ডলারের চেক দিতে খরচ হবে কমপক্ষে ৩০০ বিলিয়ন থেকে ৫০০ বিলিয়ন ডলার, যা বর্তমান শুল্ক রাজস্বের প্রায় দ্বিগুণ।

ট্যাক্স ফাউন্ডেশনের ফেডারেল ট্যাক্স পলিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিকা ইয়র্ক সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, যদি যোগ্যতার সীমা এক লাখ ডলারে নির্ধারণ করা হয়, তাহলে প্রায় ১৫ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক এই চেকের জন্য যোগ্য হবেন। এতে খরচ দাঁড়াবে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার। যদি শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, ব্যয় আরও বেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, পুরো বাজেট বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, শুল্ক থেকে নেট আয় মাত্র ৯০ বিলিয়ন ডলার—যা ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ৩০০ বিলিয়ন ডলারের রিবেটের তুলনায় নগণ্য।

অন্যদিকে আর্নল্ড ভেঞ্চারসের ভাইস প্রেসিডেন্ট জন আর্নল্ড জানান, প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে খরচ দাঁড়াতে পারে ৫১৩ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।

ইয়েল বাজেট ল্যাব জানিয়েছে, অক্টোবর মাসে মার্কিন ভোক্তারা গড়ে ১৮ শতাংশ কার্যকর শুল্কহার পরিশোধ করেছেন। এটি ১৯৩৪ সালের পর সর্বোচ্চ। ট্রাম্পের এপ্রিল মাসে আরোপিত বৈশ্বিক শুল্কের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে এবং কোম্পানিগুলো সেই ব্যয় ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।

এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক এক সরকারি দক্ষতা বিভাগ থেকে সাশ্রয়কৃত অর্থের ভিত্তিতে ৫,০০০ ডলারের ‘ডিভিডেন্ড চেক’ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে এটি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি, কারণ জাতীয় ঘাটতি তখন আরও বেড়ে যায়।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025