টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আউলিয়াবাদ অডিটোরিয়ামে এবারের ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার হেড অব মার্কেটিং কামরুজ্জামান সাইফুল। কিন্তু স্থানীয় আলেম সমাজের বাধার মুখে বন্ধ হয়ে গেছে ছবিটির প্রদর্শন। এক মাসের অনুমতি থাকলেও মঙ্গলবার আয়োজকরা শো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কামরুজ্জামান সাইফুল বলেন, ‘সব জায়গা থেকে সিনেমা প্রদর্শনের অনুমতি নেওয়া ছিল। সার্টিফিকেশন বোর্ডের ইউনিভার্সেল রেটেড সার্টিফিকেট ছিল। তবু সিনেমা প্রদর্শনীতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমি হাত জোড় করে মাফ চেয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময়ের আর্জি জানালাম। আলেম সমাজ অনড়। আমাকে কালই চলে যেতে হবে।’
সাইফুল টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকায় অডিটোরিয়াম ভাড়া নিয়েছেন, পাঁচ দিনের অগ্রিমও দিয়েছেন। তিনি জানান, ঈদের আগের দিন থেকে স্থানীয় মসজিদ ও মাদ্রাসা থেকে মাইকে ‘তাণ্ডব’ প্রদর্শনী বন্ধ করতে বলা হয়। পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়। এরপর একটি মিছিল বের হয়, যা স্থানীয়ভাবে ভাইরাল হলে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়। ঈদের দিন মাত্র ২০-২৫ জন দর্শক নিয়ে সন্ধ্যার শো চলে।
সাইফুল বলেন, ‘পরদিন সিনেমা হল বন্ধে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর জমা দেওয়া হয়। ঈদের আগেই পুলিশি সহায়তা চেয়ে থানায় আবেদন করি। কিন্তু থানা থেকে কোনো সহায়তা করা হয়নি। ঈদের ছুটিতে টাঙ্গাইল ডিসি ও এসপি অফিসে যোগাযোগ করেও সাহায্য পাইনি। তবু ঈদের পরদিন অডিটোরিয়াম চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিই। সেদিন মিছিল না হলেও তারা সমাবেশ করেন।’
এ বিষয়ে স্থানীয় (ইউনিয়ন শাখা) ইমাম পরিষদের সহ-সভাপতি মাদ্রাসা শিক্ষক হযরত আলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এলাকায় বেশ কয়েকটি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। অশ্লীলতা ছড়াতে পারে এমন আশঙ্কায় আলেম সমাজসহ স্থানীয়রা এই সিনেমা প্রদর্শনের বিপক্ষে।’
তিনি বলেন, ‘আয়োজক আমাদের কাছে এসেছিলেন, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিনেমা চালানোর কথা বলেছেন; কিন্তু আমরা তো তাকে এটা চালাতে বলতে পারি না।’
এদিকে ‘তাণ্ডব’ প্রদর্শনে বাধা প্রধানের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেটি দেখে প্রতিবাদ করছেন অনেকে।
এ ঘটনায় কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে চলচ্চিত্র প্রদর্শন নিষিদ্ধ নয়। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সুরাহা করা হবে।’