টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা


টানা দুই দিনের টিপটিপ ও মাঝে-মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা বাড়ছে। বান্দরবান জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত মানুষজন পড়েছেন আতঙ্কে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরজুড়ে মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সরে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, এরকম আরও কয়েকদিন বৃষ্টি হলে পাহাড় ধসে যেতে পারে। তাই এখন থেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে, না হলে বড় বিপদ হতে পারে। ঝুঁকি জানি, কিন্তু ঘরে জিনিসপত্র রেখে কোথায় যাবো? সব কিছু ফেলে যাওয়া সম্ভব না। নিম্নআয়ের মানুষ আমরা। নিরাপদ স্থানে বসবাসের সামর্থ্য নেই। বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় থাকতে হচ্ছে।

জেলার প্রশাসনের তথ্য মতে, গত দেড় যুগে বান্দরবানে পাহাড় ধসে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ২০০৬ সালে সদর উপজেলায় ৩ জন, ২০০৯ সালে লামায় ১০ জন, ২০১০ সালে নাইক্ষ্যংছড়িতে ১০ জন, ২০১২ সালে লামার ফাইতং ইউনিয়নে ২৮ জন, ২০১৭ সালে সদরের কালাঘাটা এলাকায় ৭ জন ও রুমা সড়কে ৫ জন, ২০২১ সালে ছাইঙ্গ্যা ঝিরিতে এক পরিবারের ৩ জনসহ বিভিন্ন সময়ে বহু প্রাণহানি ঘটেছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালে নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় ধসে একজন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক সনাতন কুমার মণ্ডল জানান, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ২৯ মে রাত ৯টা থেকে ৩০ মে সকাল ৯টা পর্যন্ত বান্দরবানে ১৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত ৩১ মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস রয়েছে।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি জানান, আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ১৭ মে থেকে দুর্যোগকালীন জরুরি সেবা কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ২২০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বেচ্ছাসেবীরা ২৪ ঘণ্টা মাঠে থেকে মনিটরিং ও উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেবেন।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025