জাতিসংঘ অধিবেশনের আগে নিউইয়র্কে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে লুক্সেমবার্গ, অ্যান্ডোরা এবং মোনাকো।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একই সম্মেলনে ফ্রান্স, বেলজিয়াম এবং মাল্টাও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশের তালিকায় আরও পাঁচটি দেশ যুক্ত হলো।
ফিলিস্তিন ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বিষয়ক এই বৈঠকে দেশগুলোর নেতারা এই ঘোষণা দেন। মাল্টার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই স্বীকৃতি আমাদের শান্তি ও ন্যায়বিচারে বিশ্বাসের প্রতিফলন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের প্রতি আমাদের অবস্থানকে স্পষ্ট করে।’
লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী এই সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে আখ্যা দেন। অন্যদিকে, বেলজিয়াম জানিয়েছে যে, তাদের এই পদক্ষেপ দীর্ঘদিনের আলোচনাভিত্তিক দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি তাদের সমর্থনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
একই বৈঠকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা দেন, ‘আজ আমি ঘোষণা করছি—ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এটাই একমাত্র সমাধান, যা ইসরায়েলকে শান্তিতে বসবাসের সুযোগ করে দেবে।’ ম্যাক্রোঁ আরও বলেন যে, গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা অব্যাহত থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ করার সময় এসেছে। গাজায় বোমা হামলা, হত্যাযজ্ঞ ও মানুষের দুর্দশা—কোনো কিছুই এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার যৌক্তিকতা তৈরি করে না।’
তিনি সম্প্রতি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া অ্যান্ডোরা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, মোনাকো, পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য এবং সান মারিনোর প্রশংসা করেন। ফরাসি প্রেসিডেন্টের মতে, এই স্বীকৃতি ‘কার্যকর আলোচনার পথ প্রশস্ত করবে’ এবং তিনি আরব ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আহ্বান জানান।
তিনি আরও জানান যে, গাজায় আটক সব বন্দিকে মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত হলে ফ্রান্স ফিলিস্তিনে দূতাবাস খুলতে প্রস্তুত এবং আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা মিশনে অংশগ্রহণ করতেও প্রস্তুত। ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যোগ দেয়নি।