সড়কে এক মাসে ঝরেছে ৪১৮ প্রাণ

গত জুলাই মাসে বাংলাদেশে মোট ৪৪৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪১৮ জন এবং আহত হয়েছেন ৮৫৬ জন। নিহতদের মধ্যে ৭২ জন নারী ও ৫৩ জন শিশু রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সংস্থাটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, সড়ক দুর্ঘটনার পাশাপাশি নৌপথে দুর্ঘটনায় ৬ জন এবং রেলপথে দুর্ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪২ জন।

এতে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১০৯ জন, পথচারী ৯২ জন এবং বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও সহকারী ৫৬ জন রয়েছেন। এর বাইরে অঞ্চলভিত্তিক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ১০৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন ঢাকা বিভাগে। একক জেলা হিসেবে ঢাকায় সর্বোচ্চ ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে রাজধানীতে ঘটে যাওয়া ২৬টি দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৯ জনের।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও সড়ক, অতিরিক্ত গতি, চালকদের নির্দিষ্ট বেতন ও কর্মঘণ্টার অভাব, তরুণ ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, সাধারণ মানুষের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা ও তা না মানার প্রবণতা, এবং দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা।

সময়ভিত্তিক বিশ্লেষণে সংস্থাটি দেখিয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ভোরে ৪.৯৬ শতাংশ, সকালে ২৯.৫৭ শতাংশ, দুপুরে ২১.৮৯ শতাংশ, বিকেলে ১৭.১৫ শতাংশ, সন্ধ্যায় ১১.০৬ শতাংশ এবং রাতে ১৫.৩৪ শতাংশ।

অঞ্চলভিত্তিক পরিসংখ্যানে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে (২৬.৪১ শতাংশ) এবং সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে (৭.২২ শতাংশ)। শুধু ঢাকা বিভাগেই ১১৭টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১০৫ জন। একক জেলা হিসেবে ঢাকায় সর্বোচ্চ ৪৭টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীতে ঘটে যাওয়া ২৬টি দুর্ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যু এবং ৩৮ জন আহত হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বেশকিছু সুপারিশ করেছে। এগুলো হলো-

১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ জোরদার করা। ২. চালকদের নির্দিষ্ট বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্ধারণ। ৩. বিআরটিএর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি। ৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের ক্ষেত্রে ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ। ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে সেগুলোর জন্য আলাদা সার্ভিস রোড তৈরি। ৬. ধাপে ধাপে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ। ৭. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ। ৮. রেল ও নৌপথ উন্নয়ন করে সড়ক পরিবহনের ওপর চাপ হ্রাস। ৯. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। ১০. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ নিরবচ্ছিন্নভাবে বাস্তবায়ন।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025