সমন্বয়ককে ২০০ কোটি টাকার চেক দেন চিকিৎসক!

জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (এনআইসিআরএইচ) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. শেখ গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে বলা হয়, তিনি স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদ পাওয়ার প্রলোভনে একজন সমন্বয়ককে ১০ লাখ টাকা নগদ এবং ২০০ কোটি টাকার চারটি চেক প্রদান করেছেন।

ঘটনাটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঘটেছে বলে জানা গেছে। এই অভিযোগ দেশের স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা হিসেবে আলোচিত হচ্ছে।

জানা যায়, অধ্যাপক ডা. শেখ গোলাম মোস্তফা, যিনি এনআইসিআরএইচ-এর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদ পাওয়ার আশায় একটি সমন্বয়ক গ্রুপের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনে জড়িয়েছেন। এই গ্রুপ নিজেদের যমুনা থেকে আগত হিসেবে পরিচয় দিয়েছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, ডা. মোস্তফা ১০ লাখ টাকা নগদ এবং ২০০ কোটি টাকার চারটি চেক প্রদান করেছেন। এই লেনদেনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জড়িত, যিনি নিজেকে সমন্বয়ক আরেফিনের ভাই হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

আরিফুল ইসলাম সরাসরি ডা. মোস্তফার চেম্বার থেকে চেকগুলো সংগ্রহ করেন। যদিও আরেফিন সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না, তিনি ফোনে কথোপকথনের মাধ্যমে এই ডিল নিশ্চিত করেছেন বলে জানা গেছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে। দুদক সূত্রে জানা যায়, ডা. শেখ গোলাম মোস্তফার ব্যাংক হিসাব, আর্থিক লেনদেন এবং সমন্বয়ক গ্রুপের সঙ্গে তার যোগাযোগের রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্তকারী দল চেকগুলোর সত্যতা এবং লেনদেনের বিস্তারিত তথ্য যাচাই করছে।

দুদকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই অভিযোগ যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তবে এটি স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির একটি গুরুতর ঘটনা। আমরা এ বিষয়ে নিরপেক্ষ ও কঠোর তদন্ত পরিচালনা করছি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করেনি। তবে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা দুদকের তদন্তের ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ডা. শেখ গোলাম মোস্তফা বলেন, তারা আমাকে জোর করে উপদেষ্টা বানাতে চায় এবং মিথ্যা প্রলোভনে ও জোর করে চেকে স্বাক্ষর নেয়। তারা যেদিন আমার অফিসে এসেছিল সম্ভবত তাদের দুজনের হাতে অস্ত্র ছিল।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের দুর্নীতি রোধে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া, আর্থিক লেনদেনের কঠোর নজরদারি এবং প্রশাসনিক সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। এ ছাড়া, স্বাস্থ্য খাতে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে দুদকের তদন্তের ফলাফল দ্রুত প্রকাশ এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। অস্ত্রধারী সমন্বয়কদের জড়িত থাকার বিষয়টি তদন্তে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেছেন।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025