সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রতারণা, লাখ টাকা আত্মসাৎ

গাজীপুরের কালীগঞ্জে সমন্বয়ক ও তার বাবা পরিচয়ে সরকারি ঘর ও সাম্বারসিবল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে লাখ টাকার বেশি অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মো. রাকিব চৌধুরী (২৬) ও তার বাবা আলাউদ্দিন চৌধুরী (৬৫) নামের দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সোমবার কালীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন চারজন ভুক্তভোগী।

মঙ্গলবার অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

অভিযুক্ত রাকিব উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের রয়েন গ্রামের বাসিন্দা। অপর অভিযুক্ত তার বাবা আলাউদ্দিন চৌধুরী। ভুক্তভোগীরা হলেন- একই এলাকার সাফির উদ্দিন শেখ (৬০), মো. সারোয়ার (৩০), মোছা. সালেহা বেগম (৩৫) এবং বক্তারপুর ইউনিয়নের ফুলদী গ্রামের মো. হোসেন মিয়া (৩৬)।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারির শেষের দিকে রাকিব নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে সরকারি ঘর ও সাম্বারসিবল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ প্রলোভনে পড়ে সাফির উদ্দিন ৪১ হাজার টাকা, সারোয়ার ১১ হাজার টাকা, সালেহা ও হোসেন মিয়া ৪৫ হাজার টাকা করে মোট ৯০ হাজার টাকা প্রদান করেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও ঘর কিংবা সাম্বারসিবল কেউ পাননি। টাকা ফেরত চাইলে রাকিব তাদের ভয়ভীতি দেখান এবং মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে জেল খাটানোর হুমকি দেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে রাকিব একইভাবে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে প্রতারণা করে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সৈয়দ আহমেদ কবির বুলবুল বলেন, রাকিব ঘর ও সাম্বারসিবল দেওয়ার নাম করে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। বর্তমানে সে বাড়ি থেকে পলাতক রয়েছে। ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ দেয়ার পর পুলিশ অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়ে তাকে না পেয়ে ফোনে কথা বলেছে।

অভিযুক্ত রাকিব চৌধুরী টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি ঘর ও সাম্বারসিবল দেওয়ার কথা বলে আটজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। কাজ হয়নি। ভুল করেছি। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তবে এসব বিষয়ে আমার বাবা কিছুই জানেন না।

এ বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, গাজীপুর জেলা কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, আমাদের সংগঠনের সঙ্গে রাকিবের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সে নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করলেও এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

কালীগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাবীবুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে ওসি স্যারের নির্দেশে অভিযুক্ত রাকিবের বাড়িতে গিয়েছিলাম। বাড়িতে না পেয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে সে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে দ্রুত টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে সময় দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত না দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। অভিযোগের সত্যতা মিললে প্রতারকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025