সীমাহীন দুর্নীতিতে জড়িত আট উপদেষ্টা!

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আটজন উপদেষ্টার সীমাহীন দুর্নীতির প্রমাণ তার কাছে রয়েছে। তবে তিনি উপদেষ্টাদের নাম বলেননি।

তিনি আরও জানিয়েছেন, এই উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ হয় না, বদলিও হয় না।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে এক সেমিনারে এমন কথা জানান অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি আব্দুস সাত্তার। তিনি বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা।

আব্দুস সাত্তার বলেন, জুলাই আন্দোলনের রক্তের ওপর দিয়ে চেয়ারে বসা অন্তত আটজন উপদেষ্টার দুর্নীতির প্রমাণ গোয়েন্দা সংস্থার কাছে রয়েছে, কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, একজন উপদেষ্টার এপিএসের অ্যাকাউন্টে ২০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে, তবু ব্যবস্থা হয়নি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, নূরজাহান বেগমের মতো ব্যক্তির কি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চালানো উচিত? কিংবা অভিজ্ঞতা ছাড়াই স্থানীয় সরকার ও যুব ও ক্রীড়া—এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া যৌক্তিক কি না?

এ সময় আব্দুস সাত্তারের বক্তব্যে সাড়া দিয়ে উপস্থিত কর্মকর্তারা হাততালি দেন।

আব্দুস সাত্তারের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও দুর্নীতি কমেনি; বরং বেড়েছে। ভূমি ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ঘুষ দাবির ঘটনাও তুলে ধরেন তিনি।

তিনি বলেন, এক সহকারী কমিশনার (ভূমি) একটি স্কুলের জমির নামজারিতে ৩০ লাখ টাকা চেয়েছেন। ঢাকার আশপাশের একজন ইউএনও একটি কারখানার লে আউট পাস করতে ২০ লাখ টাকা চেয়েছেন।

আব্দুস সাত্তার আরও বলেন, আমি একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে বসি। গত বছর ৫ আগস্টের পর ওই অফিসে হাজার হাজার কর্মকর্তা–কর্মচারী ভিড় করছেন। আমার বস তারেক রহমান ডেকে বললেন, “কী হচ্ছে? এরা কারা। তারা এখানে কী জন্য আসে?” আমি বলেছি, এরা সবাই বঞ্চিত। এরা গত ১৫ বছর হাসিনার আমলে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। হাসিনার পতনের পর উচ্ছ্বাসে ছুটে এসেছেন ন্যায়বিচার পেতে। উনি বলেছেন, “দলীয় অফিসে ইন–সার্ভিস কর্মকর্তারা আসা ভালো লক্ষণ নয়। আপনি তাদের অফিসে আসতে নিষেধ করে দেন।” আমি অফিসের গেটে নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছি। ইন–সার্ভিস কোনো কর্মকর্তা অফিসে আসতে পারবেন না। যদি কোনো সমস্যা থাকে অফিসার্স ক্লাবে আসবেন।

আব্দুস সাত্তারের এ বক্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সাবেক সচিব ও বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) রেক্টর এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, তিনি একজন দায়িত্বশীল মানুষ। তথ্য-উপাত্ত ছাড়া কথা বলার লোক নন তিনি। নিশ্চয়ই তার কাছে প্রমাণ রয়েছে। তার এই বক্তব্যকে বিবেচনায় নিয়ে সরকারের চিহ্নিত করা উচিত, ওই আট উপদেষ্টা কারা। উপদেষ্টারা এসব করলে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দোষ দিয়ে লাভ কী।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025