শততম টেস্টে উজ্জ্বল মুশফিক

৯০তম ওভারের পঞ্চম বলে আয়ারল্যান্ডের লেগ স্পিনার গ্যাভিন হোয়েকে প্যাডল সুইপ করলেন মুশফিকুর রহিম। ২ রান নিতে গিয়েও তিনি নিলেন না। শেষ বলটা লিটন দাস ডিফেন্স করলেন। ৯৯ রানে থাকা মুশফিকের সেঞ্চুরির জন্য হয়তোবা দিনের খেলা বাড়িয়ে নেওয়ার কথাবার্তাই চলছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরোনোর পর আম্পায়াররা আর খেলা চালাতে রাজি হননি।

মিরপুরে আজ খেলতে নেমেই ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন মুশফিক। বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটা তাঁর শততম টেস্ট। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে নেমে প্রথম দিনে সেঞ্চুরি প্রায় করেই ফেলেছিলেন মুশফিক। কিন্তু আম্পায়াররা তাঁকে অপেক্ষায় রাখলেন। প্রথম দিনের খেলা বাংলাদেশ শেষ করেছে ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৯২ রানে। লিটন অপরাজিত ৪৭ রানে। মুশফিক আগামীকাল দ্বিতীয় দিনে ১ রান করতে পারলেই ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্টে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়বেন।

সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। টেস্টে যেভাবে শুরু করা দরকার, বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম-জয় সেভাবেই শুরু করেন। কখনো আক্রমণাত্মক, কখনো রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন তাঁরা। দলীয় ৫২ রানে ভাঙে তাদের উদ্বোধনী জুটি। ১৪তম ওভারের চতুর্থ বলে সাদমানের বিপক্ষে এলবিডব্লুর আবেদন করেন ম্যাকব্রাইন। আম্পায়ার প্রথমে সাড়া না দেওয়ায় রিভিউ নিয়েছেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বলবার্নি। রিভিউর মাধ্যমেই সাদমানের (৩৫) উইকেট নিয়েছে আয়ারল্যান্ড। ৪৪ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৬ চার।

সাদমানের মতো ৩০-এর ঘরে রান করে আউট হয়েছেন জয়ও। ধৈর্য ধরে ৮৫ বল খেলা জয় হঠাৎই বড় শট খেলতে গেলেন। ২৬তম ওভারের প্রথম বলে ম্যাকব্রাইনকে তুলে মারতে গিয়ে জয় ধরা পড়েছেন মিড অফে ব্যারি ম্যাকার্থির হাতে। ম্যাকার্থি এই ম্যাচে বদলি ফিল্ডার হিসেবে নেমেছেন। ৮৬ বলে ২ চারে জয় করেন ৩৪ রান। মাঝে এক ওভার বিরতি দিয়ে বাংলাদেশ ফের উইকেট হারায়। ২৮তম ওভারের চতুর্থ বলে শান্তকে (৮) অসাধারণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন ম্যাকব্রাইন। ৮ রানের মধ্যে শান্তর একটি ছক্কাও রয়েছে।

জয়-শান্তর উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ২৭.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ৯৫ রান। শততম টেস্ট খেলতে নামা মুশফিক ব্যাটিংয়ে নেমেছেন পাঁচ নম্বরে। মুমিনুল হকের সঙ্গে হাল ধরেছেন মুশফিক। যেখানে ১৫৯ রানেই বাংলাদেশ হারাতে পারত চতুর্থ উইকেট। ৫১তম ওভারের চতুর্থ বলে আয়ারল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হামফ্রিজের পর ডিফেন্স করতে যান মুমিনুল। তবে এজ হওয়া বল তালুবন্দী করতে পারেননি পল স্টার্লিং। মুমিনুলের রান তখন ৪৯।

বাংলাদেশ চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে ২০২ রানে। ৬৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মুমিনুলকে (৬৩) ফিরিয়েছেন ম্যাকব্রাইন। তাতে ভেঙে যায় চতুর্থ উইকেটে মুমিনুল-মুশফিকের ২১৪ বলে ১০৭ রানের জুটি। ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা লিটন এরপর মুশফিকের সঙ্গে দিনের বাকি অংশ নিরাপদে পার করেছেন। পঞ্চম উইকেটে মুশফিক-লিটন এরই মধ্যে ৯০ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন।

শততম টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করা একমাত্র ব্যাটার রিকি পন্টিং। ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১২০ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ক্যারিয়ারের শততম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি এখন পর্যন্ত করেছেন ডেভিড ওয়ার্নার ও জো রুট। সর্বোচ্চ ২১৮ রানের ইনিংস ২০২১ সালে চেন্নাইয়ে ভারতের বিপক্ষে খেলেছিলেন রুট।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025