সাতক্ষীরার বল্লী মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শফিকুর রহমানকে মারধর ও গলাধাক্কা দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদল নেতারা এক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছেন। তবে অন্য একটি পক্ষ দাবি করছে, এটি প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে দুই শিক্ষকের দ্বন্দ্বের ফল।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার সকালে বল্লী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গনি এবং বিএনপি কর্মী ও ইউপি সদস্য রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জন লোক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। তারা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে সহকারী শিক্ষক শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তোলেন। এরপর তারা শফিকুর রহমানকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার দাবি জানান।
প্রধান শিক্ষক কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায়, তারা শফিকুর রহমানের উপর চড়াও হন এবং তাকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে নিয়ে পাশের বল্লী ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রাখেন। পরে স্কুলের শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধভাবে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে স্কুলে ফিরিয়ে আনে।
ভুক্তভোগী শিক্ষক শফিকুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ ও ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ বলে দাবি করেছেন। তিনি জানান, শিক্ষার্থীরা তাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উদ্ধার করেছে।
ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম বলেন, শিক্ষক শফিকুর রহমান একটি মেয়ের সাথে অনৈতিক কাজ করার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলে। তিনি আরও জানান, এর আগেও এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছিল।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুল জানান, তিনি ঘটনার কথা শুনেছেন, তবে কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ পাননি। তিনি এই ধরনের ঘটনাকে ‘অপ্রত্যাশিত’ ও ‘প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর’ বলে মন্তব্য করেন।
বল্লী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গনি এই ঘটনার সাথে বিএনপির সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন।
বল্লী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুজ্জামান জানান, তারাও এই ঘটনার সাথে জড়িত নন। তিনি বলেন, উত্তেজিত জনতার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু জানান, তারা এখনো কোনো অভিযোগ পাননি, তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিনুল হক বলেন, এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।