সেনাবাহিনীর এপিসিতে (আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার) করে গোপালগঞ্জ ছেড়ে পালিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। বুধবার বিকেল ৫টার পরে গোপালগঞ্জ ছেড়ে বের হয়ে যান তারা। তাদের পালানোর ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম নিরাপদে একটি এপিসিতে ওঠেন। এ সময় এই বাহনে আগে উঠে বসে থাকতে দেখা যায় নাহিদ ইসলামকে। অন্য একটি এপিসিতে গিয়ে ওঠেন আখতার হোসেন। কড়া পাহারায় তাদের নিয়ে ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর গোপালগঞ্জ ছাড়ে।
এর আগে দুপুরে সমাবেশ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় সড়ক অবরোধ করে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে হামলা চালায় জনতা। এ সময় গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন এনসিপির নেতারা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে কয়েক রাউন্ড বাবার বুলেট ও সাউন্ড ছুড়তে দেখা গেছে। এ সময় এনসিপি নেতাকর্মীদের গাড়িবহর লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে জনতা। এছাড়া বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে এনসিপি নেতাদের নিয়ে পিছু হটতে দেখা গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে গোপালগঞ্জে ১৪৪ জারি ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে জেলা প্রশাসন এ ঘোষণা দেয়।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে পদযাত্রা করছে দলটি। মঙ্গলবার দলের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এই কর্মসূচিকে ‘১৬ জুলাই : মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ নাম দেওয়া হয়।
এই কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জ সদরে বুধবার সকালে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। হামলা করা হয়েছে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িতেও।
অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি
এনসিপি’র কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে। বুধবার বিকেলে অন্তর্বতী সরকারের তরফ থেকে এই বিবৃতি দেয়া হয়।
বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, গণ অভ্যুত্থান আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে তরুণ নাগরিকদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশে বাধা দিয়ে তাদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। নিষ্ঠুর আক্রমণের মাধ্যমে ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্ঠি, পুলিশ ও গণমাধ্যমের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।