চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৭ মাসে দেশে ৩৬৩টি পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩২২ জনের। এর মধ্যে ২০৮ জন নারী ও শিশু হত্যার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া আত্মহত্যা করেছেন ১১৪ জন।
এ তথ্য জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। আসকের তথ্য বলছে, সবচেয়ে বেশি হত্যার ঘটনা ঘটেছে স্বামীর হাতে, প্রাণ গেছে ১৩৩ জন নারীর। স্বামীর পরিবারের সদস্যদের হাতে হত্যার শিকার হয়েছেন ৪২ জন। আর ৩৩ জন হত্যার শিকার হয়েছেন নিজ পরিবারের সদস্যদের হাতে।
অন্যদিকে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় নারী সুরক্ষা হেল্পলাইন ‘১০৯’-এর তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৭ মাসে শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের শিকার নারীর জন্য সহায়তা চেয়ে কল এসেছে ৪৮ হাজার ৭৪৫টি।
জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’-এর তথ্য অনুসারে, গত জানুয়ারি থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সাড়ে ৮ মাসে নারী নির্যাতনের ঘটনায় ১৭ হাজার ৩৪১টি কল এসেছে। এর মধ্যে পারিবারিক নির্যাতনের অভিযোগে কল এসেছে ৯ হাজার ৭৪৬টি। এসব কলের মধ্যে শুধু স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে ৯ হাজার ৩৯৪টি।
পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল আই খান বলেন, একটি মেয়ে যখন বিয়ের মাধ্যমে নতুন কোনো পরিবারে যান, তখন তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন চান, তাঁদের প্রতিটি কথা মেয়েটি মেনে নেবেন। এ ধরনের পিতৃতান্ত্রিক সংস্কৃতি নির্যাতনের ক্ষেত্র তৈরি করে। যে নারীর পড়াশোনা কম, পরিবারের আর্থিক অবস্থা দুর্বল, তাঁরা বেশি নির্যাতনের শিকার হন। বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে সমাজে একধরনের সংস্কার আছে। ফলে মেয়েদের পরিবার চায়, যেভাবেই হোক মেয়ে যেন সংসার টিকিয়ে রাখেন। এ মনোভাব থেকে নির্যাতনের ঘটনা বাড়ে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুর্বল অবস্থার কারণেও নির্যাতনের ঘটনা বাড়ে।
তিনি বলেন, নারীদের অবশ্যই নির্যাতনমূলক সম্পর্ক থেকে বের হয়ে যেতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়াও জরুরি। শাস্তির ভয় থাকলে নির্যাতন কম হয়।
সূত্র : প্রথম আলো