সুদানে তিনদিনে নিহত ১৫০০ জন

সুদানের পশ্চিম দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশার শহর দখলের সময় র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর আক্রমণে মাত্র তিনদিনে কমপক্ষে ১৫০০ মানুষ নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আরব দেশগুলো।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানায়, নারী ও শিশুসহ বেসামরিক নাগরিকরা এই অবরুদ্ধ শহর থেকে পালানোর চেষ্টা করলে আরএসএফ-এর বর্বরতার শিকার হয়।

বিশ্লেষকরা এ বর্বরতাকে ভয়াবহ গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তারা মনে করছে, এ হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত ও পদ্ধতিগতভাবে নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করার উদ্দেশ্য করা হচ্ছে।

ইয়েলের হিউম্যানিটেরিয়ান রিসার্চ ল্যাব (এইচআরএল) থেকে গণহত্যার নতুন প্রমাণ এসেছে। আরএসএফ প্রবেশের পর এল-ফাশার শহরের স্যাটেলাইট ছবিতে, মানবদেহের আকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অনেকগুলো বস্তু এবং মাটিতে লাল রঙের বিশাল অংশ দেখা গেছে।

আল জাজিরার প্রতিনিধি হিব্বা মরগান সুদানের রাজধানী খার্তুম থেকে জানান, আরএসএফের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, তারা পালানোর চেষ্টাকারী বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, কেবল একটি হাসপাতালেই ৪৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্কের মতে, আরএসএফ হাসপাতালের ভেতরে পাওয়া রোগী, স্বজন এবং স্বাস্থ্যকর্মী উপস্থিত সকলকে হত্যা করেছে।

আরএসএফ ২০২৩ সাল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। এই সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং ১ কোটি ২০ লাখের ও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ১৭ মাস ধরে অবরোধের পর দারফুরে সেনাবাহিনীর শেষ শক্ত ঘাঁটি এল-ফাশার দখল করে নেয় আধাসামরিক বাহিনী।

এদিকে, সৌদি আরব, মিশর, কাতার, তুরস্ক ও জর্ডানসহ আরব দেশগুলো আরএসএফের এই গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার পথ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

সুদানের সাবেক সরকারি কর্মকর্তা আহমেদ ইব্রাহিমের মতে, এই যুদ্ধ কেবল দুই জেনারেলের ক্ষমতার লড়াই নয়; এটি সুদানের সম্পদ দখল ও ভূরাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের বড় একটি ষড়যন্ত্রের অংশ।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025