দিনের শুরুতেই সড়কে ঝরল ৬ জনের প্রাণ

সুনামগঞ্জে ও রংপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন। নিহতদের মধ্যে আছেন মা-মেয়ে ও মা-ছেলে।

জানা গেছে, সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে ট্রাক-সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে মা-মেয়েসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন বাঘেরকোনা গ্রামে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতরা হলেন- সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উকিলপাড়ার বাসিন্দা মৃত প্রণয় দাশের স্ত্রী আবাদিত কেশবা (৪০) ও তার মেয়ে সুনামগঞ্জের সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী প্রথমা চৌধুরী। এই পরিবারের কোনো সদস্যই আর বেঁচে রইলেন না। দু’বছর আগে মারা গেছেন কেশবার স্বামী। এবার মা-মেয়ে। অপর নিহত সিএনজি চালক সজল ঘোষ (৫০) শহরের নবীনগর এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাকের চালককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। আটক চালকের নাম পারভেজ আহমদ (৩০)। তিনি দিরাই থানার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। তার বর্তমান ঠিকানা সিলেটের বাদাম বাগিচায়।

স্থানীয়রা জানান, ট্রাক-সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে ২ জন নিহত হন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমা চৌধুরীকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইকবাল হাসান বলেন, স্থানীয়রা প্রথমাকে হাসপাতালে আনেন। হাসপাতালে আনার পথেই তিনি মারা যান। পরে হাইওয়ে পুলিশ আরও দু’জনকে নিয়ে আসেন। তারাও মৃত ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, সকাল ৭টা ১০ মিনিটে সুনামগঞ্জগামী একটি দ্রুতগতির ট্রাক সিলেটমুখী সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে বাঘেরকোনা গ্রামের সামনে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, আমরা ঘুমে ছিলাম। বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে দৌড়ে বের হয়ে দেখি ট্রাকটি পানিতে পড়ে যাচ্ছে। আর সিএনজিটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার কার্যক্রম চালায় শান্তিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। টিম লিডার আলমগীর জানান, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থল এসেছি। দু’টি মরদেহ উদ্ধার করেছি।

জয়কলস হাইওয়ে পুলিশের ওসি সুমন কুমার চৌধুরী বলেন, দুর্ঘটনায় দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক ও সিএনজি উদ্ধার করা হয়েছে।

শান্তিগঞ্জ থানার ওসি আবদুল আহাদ জানিয়েছেন, ঘাতক ট্রাকের চালকে আটক ও দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও সিএনজিকে জব্দ করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান।

অন্যদিকে, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের দমদমা ব্রিজ এলাকায় বালুবাহী একটি ট্রাকের ধাক্কায় পিকআপে থাকা তিন আরোহী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন পিকআপের ড্রাইভার। তিনি বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- পিকআপের হেলপার ও নগরীর মীরগঞ্জ এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে আরিফ, পীরগাছা থানার সাতদরগা এলাকার মোতালেব হোসেনের স্ত্রী শাহিনা (২৮) এবং তাদের ছেলে ওয়ালিদ স্বাধীন।

শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেট্রোপলিটন তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাজান।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, নগরীর দমদমা ব্রিজের উত্তরে মহাসড়কের ওপর ভোর চারটার দিকে একটি মালবাহী পিকআপ মাহিগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্য ইউটার্ন নিতে গেলে রংপুর-ঢাকা অভিমুখে অপর একটি বালুর ট্রাক ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপে থাকা তিনজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ঘটনার পরপরই ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপার পালিয়ে যায়।

মেট্রোপলিটন তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাজান বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি জব্দ করে থানায় নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে পলাতক ট্রাক ড্রাইভার ও হেল্পারকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025