রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে। যার কারণে নদ-নদীর পানি আরও বেড়েছে। সুরমা-কুশিয়ারাসহ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে। সারা রাতের বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি আটকে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বেশির ভাগ এলাকার বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন বাসিন্দারা। এমন বৈরি আবহাওয়ায় পর্যটকদের ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে একটি পর্যটনকেন্দ্র।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে রেকর্ড পরিমাণ ৪০৪.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর রোববার সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৯.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, সিলেটের আকাশে মেঘ রয়েছে। আগামী দুইদিন বৃষ্টি হতে পারে। এরপর এই পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সিলেটের তিনটি নদীর ৫ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ পয়েন্টে ১৪৩ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার এবং লোভা নদীর লোভাছড়ার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারার শেরপুর পয়েন্টে ৩৫ সেন্টিমিটার, ডাউকির জাফলং পয়েন্টে ২৫১ সেন্টিমিটার, সারি-গোয়াইনের গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ৭৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রোববার সকাল সাড়ে ৮টা) ১২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে আসামে ৪১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার কারণে সিলেটের নদ-নদীতে পানি বাড়বে।
এ অবস্থায় পর্যটকদের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে প্রকৃতির অপরূপ দানে সমৃদ্ধ সিলেট অঞ্চল। এ অঞ্চলেরই অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র গোয়াইনঘাটের সাদাপাথর। তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণে সারাদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত পছন্দের এই পর্যটনকেন্দ্রটি ক্রমশঃ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিষয়টি বিবেচনা করে প্রশাসন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে। আবহাওয়া স্থিতিশীল হলে পর্যটনকেন্দ্রটি আবার খুলে দেয়া হবে।
শুক্রবার (৩০ মে) সাদাপাথর বন্ধের ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার। তবে তা জানা গেছে আজ রোববার।
এই বিলম্বের কারণ জানাতে গিয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার বলেন, গত শুক্রবার ঢল নামছিল খুব। এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে আমি বন্ধের নোটিশে স্বাক্ষর করি। তবে যেহেতু শক্র ও শনিবার ছুটির দিন ছিল, সে কারণে আমার জারিকারকরা হয়তো তা জারি করতে পারেনি। তাই এই বিলম্ব।
তিনি জানান, আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে গেলে আবার সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রটি খুলে দেয়া হবে।