চলতি ২০২৫ সালে নদীগুলোতে প্রতিমাসে গড়ে ৪৩টি করে মরদেহ পাওয়া গেছে। নৌ পুলিশের পরিসংখ্যান সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
উদ্ধার হওয়া মরদেহের ৩০ শতাংশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। জানা গেছে, মৃত্যুর অনেক সময় পর মরদেহ পাওয়া আর জনবল ও লজিস্টিক সংকটের কারণে এসব মরদেহ শনাক্ত করতে বেগ পেতে হয়।
গত শনিবার (২৩ আগস্ট) ঢাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী কেরাণীগঞ্জের মীরেরবাগ এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় গলায় কালো রঙের কাপড় প্যাঁচানো এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই মরদেহটি উদ্ধারের এক ঘণ্টা পর একই স্থান থেকে ওড়না দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। এ ছাড়া, একই দিনে তরুণের হাতের সঙ্গে তরুণীর এক হাত বাঁধা অবস্থায় বুড়িগঙ্গা নদী থেকেই উদ্ধার করা হয় দুইজনের মরদেহ।
নৌ পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালে ৪৪০টি মরদেহ পাওয়া যায় নদীতে। যার মধ্যে শনাক্ত হয়েছে ২৯৯টি, আর পরিচয় মেলেনি ১৪১টির। অন্যদিকে চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে ৩০১টি মরদেহ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৯২ জনের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
ঢাকা অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চলতি বছর প্রতিমাসে গড়ে ৪৩টি মরদেহ পাওয়া গেছে নদীগুলোতে। এ সংখ্যা আগের বছর ছিল ৩৭। এ বছর উদ্ধার হওয়া মরদেহের ৩০ শতাংশের পরিচয়ই শনাক্ত করা যায়নি। নদীতে যেসব মরদেহ পাওয়া যায় সেগুলো অনেকদিন আগের হওয়ায় গলে-পচে যায়। আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া যায় না। চেহারাও বিকৃত হয়ে যায়। তাই অনেক সময় মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। পাশাপাশি নৌ পুলিশের জনবল আর লজিস্টিক সংকটের কারণে তদারকি ও মরদেহ শনাক্তে বেগ পেতে হয়।
অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, নদীতে মরদেহ ফেললে তা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই অপরাধীরা নদীকে মরদেহ গুম করার ডাম্পিং স্টেশন হিসেবে ব্যবহার করছে। বেশি লাশ উদ্ধার হয়- এমন এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি এসব মরদেহ শনাক্তের কাজে সকল বাহিনীকে সমন্বয় করতে হবে।