ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) নামে এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত সোহাগের বাবার নাম আইউব আলী হাওলাদার ও মা আলেয়া বেগম। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশাল।
হত্যার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
জানা গেছে, মিটফোর্ড এলাকার ৪ নম্বর রজনী বোস লেনে ‘সোহানা মেটাল’ নামে একটি দোকান রয়েছে সোহাগের। তিনি পুরোনো অ্যালুমিনিয়াম সিট, তামা, পিতল, দস্তা, রাং, সিসা ইত্যাদি বিক্রি করেন। এলাকায় তাঁর গুদামও রয়েছে। ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে মঙ্গলবার রাতে তাঁর গুদামে গিয়ে প্রতিপক্ষ গুলি ছোড়ে। এর পর গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে রজনী বোস লেনে একদল লোক তাঁকে আটক করে, সেখান থেকে মারধর করতে করতে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটক এলাকায় নিয়ে যায়। হাসপাতাল চত্বরের ভেতরে নিয়ে ইট দিয়ে তাঁর মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালের সামনে ফেলে যায় হামলাকারীরা। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জানা যায়, ঢাকার কেরানীগঞ্জে থাকতেন সোহাগ। তিনি একসময় যুবদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সর্বশেষ রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা বলছেন, ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আরেকটি ব্যবসায়ী চক্রের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে মঙ্গলবার রাতের গুলি এবং গতকালের হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোহাগ হত্যায় জড়িতদের মধ্যে ছিলেন টিটু, মনির, অপু দাস, মঈন ও পলাশসহ তাদের সহযোগীরা।
কোতোয়ালি থানার এসআই মনির হোসেন জানান, হত্যায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে চলছে অভিযান। আশপাশের ভবন থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করছে পুলিশ। ঘটনাস্থলসহ এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। এদিকে সেনাবাহিনী সন্দেহভাজন পাঁচজনকে আটক করেছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।