ঢাকা: বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যখন টালমাটাল, তখন দেশের সর্বোচ্চ পদাধিকারীদের ধারাবাহিক বৈঠক নতুন করে আলোচনা ও জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে। আজ রবিবার (৩১ আগস্ট, ২০২৫) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের বাসভবনে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। একই সময়ে, অন্যপ্রান্তে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান। এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকগুলো দেশের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে এবং একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আমাদের বিশ্বস্ত সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের বৈঠক হয়েছে। আজ রবিবার (৩১ আগস্ট) বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের গুলশানের বাসভবনে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
কী হতে চলেছে?
আজ বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে প্রধান বিচারপতির গুলশানের বাসভবনে প্রধান বিচারপতি ও সেনাপ্রধানের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। দেশের শীর্ষ দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদের এই দুই ব্যক্তির মধ্যে আলোচনার সুনির্দিষ্ট বিষয় জানা না গেলেও, এর সময় ও প্রেক্ষাপট অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। গত এক বছর ধরে দেশে মব হামলা, রেকর্ড সংখ্যক হত্যা, বিশৃঙ্খলা এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটে চলেছে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় জনমনে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে বিচার বিভাগ ও সামরিক বাহিনীর প্রধানের এই বৈঠক একটি সম্ভাব্য সমাধানের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একই সময়ে ড. ইউনূসের সঙ্গে পিএসও’র বৈঠক
প্রধান বিচারপতি-সেনাপ্রধানের বৈঠকের প্রায় একই সময়ে, বেলা ১১টা ২২ মিনিটে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকেরও কোনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে, যেহেতু সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়, তাই এই বৈঠককে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা বলে মনে করা হচ্ছে। জনগণের প্রত্যাশা, এই ধারাবাহিক বৈঠকগুলো একটি স্থিতিশীল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ খুলে দেবে, যা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে শান্তি ফিরিয়ে আনবে।
জনগণের প্রত্যাশা ও সম্ভাব্য পরিবর্তন
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ হাঁসফাঁস করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি এবং অর্থনৈতিক সংকট জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা এই অস্থিরতা থেকে মুক্তি পেতে জনগণ এখন সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে। এই পরিস্থিতিতে, দেশের সামরিক ও বিচার বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের এমন ঘন ঘন ও তাৎপর্যপূর্ণ বৈঠকগুলো জনমনে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। এটি একটি নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন বা একটি নির্বাচিত সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।