পাঁচ মাসে ১৪১টি ‘মব হামলা’, নিহত ৫২ জন

চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জানুয়ারি থেকে মে) বাংলাদেশে ১৪১টি মব হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ৫২ জন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৮৯ জন।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

সম্প্রতি ঢাকার উত্তরায় দিনে-দুপুরে মব (জনতার উশৃঙ্খলা) তৈরি করে চেষ্টা করা হয় আবাসিক হোটেল দখলের। মোটরসাইকেলে এসে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে দুর্বৃত্তরা। মে মাসে ধানমন্ডিতে স্বৈরাচার সরকারের দোসর রয়েছে দাবি করে একটি বাড়িতে ঢুকতে চায় একদল তরুণ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এরপর ২২ জুন উত্তরায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার ঘটনায় আবারও সামনে আসে মবের দৌরাত্ম্য।

মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিলেও থামছে না নৈরাজ্য। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাঁচ আগস্টের পর বেশিরভাগ মব হামলার ঘটনাই পরিকল্পিত। নিরাপত্তা শঙ্কায় নিয়ন্ত্রণে হিমশিম পুলিশ।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, সারা দেশে জানুয়ারি মাসে ২১টি মবের ঘটনায় ১২ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে নিহত ৮ ও আহত ৩৪ জন। মার্চে ৩৯টি ঘটনায় উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে নিহত ১৩ ও আহত ৯৬। এপ্রিলে ২৭টি মবের ঘটনায় ১০ জন নিহত ও আহত ৫৩। আর মে মাসে মবের বিশৃঙ্খলার ঘটনা ৩৬টি এবং নিহত ৯, আহত ৬৮ জন ।

মব জাস্টিস এর নামে হামলার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। সরকার এক বিবৃতিতে, মবে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিলেও থামছে না মব সন্ত্রাস।

বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, যারা মবের সঙ্গে জড়িত তাঁদের কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ঘটনা আর ঘটুক এটি আমরা আর প্রত্যাশা করি না। যদি কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে তাঁকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুলিশ সদস্যদের মাঝেই নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি এখনও। তাই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণও করতে পারছে না বাহিনী।

সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, এই পরিকল্পিত আক্রমণকে মব দিয়ে কাটিয়ে ওঠা যাবে না। বিবৃতির দেশ বাংলাদেশ না, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

মব সন্ত্রাসকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ একাধিক মানবাধিকার সংস্থা। এক্ষেত্রে সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই বলেও মত তাদের।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025