পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে চলমান সহিংস বিক্ষোভে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে কমপক্ষে আটজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পাকিস্তানি কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ চলমান সংঘর্ষ নিরসনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি কমিটি গঠন করেছেন।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সোমবার আঞ্চলিক রাজধানী মুজাফফরাবাদে জম্মু কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটির নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হওয়ার পর থেকে বিক্ষোভ কয়েকদিন পরেও এ সম্পর্কিত তথ্য বহির্বিশ্বে সীমিত পরিমাণে পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভের শুরু থেকেই এই অঞ্চলে ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর থেকে এ অঞ্চল নিয়ে দু’দেশের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
সোমবার থেকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, স্কুল, পরিবহন বন্ধ
ইসলামাবাদের দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তিন পুলিশ এবং পাঁচজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এ ঘটনায়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার থেকে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে বিক্ষোভকারী এবং পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ এখনও থামেনি।

পাকিস্তানি বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল এবং পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে এবং গত চার দিন ধরে এই অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশে তা বন্ধ রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানায়, সংঘর্ষের তদন্তের জন্য রাজনীতিবিদদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শেহবাজ শরীফ বলেন, ‘সরকার আমাদের কাশ্মীরি ভাইদের সমস্যা সমাধানে সর্বদা প্রস্তুত।’
কমিটির সদস্য, পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, ‘আমরা আশা করি আমরা আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্ত সমস্যা সমাধান করব।’
কাশ্মীরের নাগরিক অধিকার গোষ্ঠীগুলোর একটি জোটের নেতৃত্বদানকারী শওকত নওয়াজ মীর বিক্ষোভের আগে বলেছিলেন, আন্দোলনকারীরা এই অঞ্চলের রাজনীতিবিদ, আমলা এবং অন্যান্য শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা ভোগ করা সুযোগ-সুবিধার বিরোধিতা করছেন।
তিনি স্থানীয় ইউটিউব নিউজ চ্যানেল দ্য কাশ্মীর লিংককে বলেন, ‘যখন আমরা বলি যে হাসপাতালে আমাদের ওষুধের প্রয়োজন, তখন তারা (কর্তৃপক্ষ) বলে, তাদের তহবিল নেই। তবে বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্য তাদের অর্থ আছে।
অন্য প্রধান অভিযোগ হলো স্থানীয় কাশ্মীর আইনসভার আসনগুলো পাকিস্তানের অন্যান্য অংশের প্রতিনিধিদের জন্য সংরক্ষিত। জানা যায়, গত বছর একই ধরনের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছিল চারজন।




