প্রযুক্তি বিশ্বে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করল চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়া (Nvidia)। বিশ্বের প্রথম পাবলিক কোম্পানি হিসেবে ৪ ট্রিলিয়ন (৪ লক্ষ কোটি) ডলার বাজার মূলধন অতিক্রম করে নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে এই এআই চিপ জায়ান্ট। এই অর্জন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তির বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ক্রমবর্ধমান প্রভাবের এক সুস্পষ্ট ইঙ্গিত।
বুধবার এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে এই ঐতিহাসিক স্তরে পৌঁছায়, যা তাদের মাইক্রোসফট এবং অ্যাপলের মতো কোম্পানিগুলোকেও ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিতে পরিণত করেছে। মাত্র দুই বছর আগেও, অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এনভিডিয়ার বাজার মূল্য ছিল প্রায় ১.০৫ ট্রিলিয়ন ডলার। এই স্বল্প সময়ে তাদের মূলধনে চার গুণেরও বেশি বৃদ্ধি প্রযুক্তি শিল্পের গতিশীলতা এবং এআই এর ক্ষমতাকে তুলে ধরেছে।
এনভিডিয়ার এই অভাবনীয় উত্থানের মূল কারণ হলো তাদের তৈরি অত্যাধুনিক এআই চিপের ব্যাপক চাহিদা। ডেটা সেন্টার থেকে শুরু করে উন্নত গবেষণা- সব ক্ষেত্রেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিস্তার ঘটছে এবং এর প্রতিটি ধাপে এনভিডিয়ার চিপ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। ২০২৩ সালের শুরু থেকে তাদের শেয়ার মূল্য ১০০০% এরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এআই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদের জন্ম দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এনভিডিয়ার এই সাফল্য কেবল তাদের নিজস্ব নয়, বরং সামগ্রিক প্রযুক্তি খাতের জন্য এক বিশাল উদ্দীপনা। এটি প্রমাণ করে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কেবল একটি প্রযুক্তিগত প্রবণতা নয়, বরং এটি বিশ্ব অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে দ্রুত বিকশিত হচ্ছে।
যদিও মার্কিন সরকারের চীনকে চিপ রপ্তানির ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা এনভিডিয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, তবুও এআই চিপের চাহিদা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে তাদের উদ্ভাবনী শক্তি কোম্পানিটিকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা এমনকি আগামী এক বছরের মধ্যে এনভিডিয়ার বাজার মূলধন ৪.৮ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিয়েছেন।
এনভিডিয়ার এই রেকর্ড নিঃসন্দেহে প্রযুক্তি বিশ্বে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং এর চালিকাশক্তি হিসেবে চিপ প্রস্তুতকারকদের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।