নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন নিয়ে ধোঁয়াশা

নেপালে সহিংস বিক্ষোভের জেরে কে পি শর্মা অলি সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন নিয়ে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করছেন জেন-জির প্রতিনিধিরা। এ অবস্থায় প্রথমে কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শাহ এবং পরে দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নাম সামনে আসতে থাকে। এবার অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য প্রধান হিসেবে তড়িৎ প্রকৌশলী কুন ম্যান ঘিসিংয়ের নাম শোনা যাচ্ছে।

আন্দোলনকারীরা সরকারপ্রধান নির্বাচন নিয়ে বিভাজিত বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এনডিটিভি জানায়, আন্দোলনকারীরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুতই একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে চান। তাদের একাংশ প্রকৌশলী ঘিসিংকে চাচ্ছেন। আন্দোলন চলাকালে ঘিসিং ‘দেশপ্রিয়’ ও ‘সবার পছন্দে’র বলে বর্ণনা করেছিলেন।

সূত্র জানায়, ছাত্রদের একাংশের সমর্থন পাওয়ার পর প্রথমে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা এগিয়ে নেন। তিনি সাময়িক সময়ের জন্য নতুন সরকার গঠনের কথাও বলেন। আর বলেন্দ্র শাহ, যিনি ‘বলেন শাহ’ নামেও পরিচিত, বলছেন– তিনি আপাতত অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেবেন না। এই বলেন শাহ কাঠমান্ডুর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) ‘হামি নেপাল’ প্রাথমিকভাবে বিক্ষোভের আয়োজন করেছিল, যা পরে জেন-জির আন্দোলনের মাধ্যমে কে পি শর্মা অলি সরকারের পতন ঘটায়।

দ্য হিমালয়ান টাইমস জানায়, নেপালের সামরিক বাহিনীর প্রধান অশোক রাজ সিগডেল, দেশটির প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউডেল ও জেন-জির প্রতিনিধিরা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের একাংশ সুশীলাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে চাইছেন। শিগগিরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।

নেপালে অস্থিরতার জন্য কংগ্রেসকে দোষারোপ করেছেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা সম্রাট চৌধুরী। তিনি বলেন, কংগ্রেস নেপালকে ভারতের সঙ্গে একীভূত না করায় এমনটা ঘটছে। গত বুধবার ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআই এ খবর জানায়।

সম্রাট বলেন, নেপাল যদি আজ ভারতের অংশ হতো, তাহলে সেখানে শান্তি ও উন্নতি ঘটত। তাঁর এ বক্তব্য নিয়ে নেপালের কোনো নেতার প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তবে কংগ্রেস নেতা উদিত রাজ এটাকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে অস্থিরতা ছড়ানো’ বলে বর্ণনা করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবারও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা নেপালের রাস্তায় টহল দেন। বিক্ষোভ-সহিংসতা না থাকলেও পরিস্থিতি ছিল থমথমে। বিবিসি জানায়, নেপালের রামেছাপ জেলা কারাগারে সেনাবাহিনীর গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন। কারাগার থেকে মুক্তির দাবি জানানো কয়েদিদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়ালে সেনাসদস্যরা গুলি চালান। এ ঘটনায় ১২ বন্দি আহত হয়েছেন।

গত মঙ্গলবার রাতে দেশটির বাঁকের বৈজনাথ গ্রামীণ পৌরসভার নওবাস্তা এলাকার একটি কিশোর সংশোধনাগার থেকে পালানোর চেষ্টার সময় পাঁচ কিশোর বন্দি নিহত হন। নেপালের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা বিভিন্ন কারাগার থেকে পালানোর চেষ্টাকারী ও পালিয়ে যাওয়া কিছু বন্দিকে আটক করেছে। গত বুধবার সেনাবাহিনী জানায়, সপ্তারির রাজবিরাজ জেলা কারাগার থেকে পালানো ১৯২ জন বন্দিকে আটক করা হয়েছে।

জানা গেছে, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া অন্তত ৬০ কয়েদি ভারত সীমান্তে আটক হয়েছেন। ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী এসএসবি তাদের আটক করে। তাদের মধ্যে আব্দুল হাসান থালি নামের এক বাংলাদেশিও রয়েছেন বলে জানা গেছে।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025