পঞ্চগড়ে দুই বছর বয়সী ছেলের গলায় ছুরি ধরে তার মাকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (৫ জুলাই) সকালে উপজেলা সদরের জগদল বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটক চারজন হলেন- পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের জগদল বাজার এলাকার জনি ইসলাম (২৭), একই এলাকার বিপ্লব হোসেন (২৫), মকছেদুল ইসলাম (৩৩) ও সাতমেড়া ইউনিয়নের বদিনাজোত এলাকার সাদেকুল ইসলাম (২৮)।
এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে ভূক্তভোগী নারী বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারজনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাত আরও দুইজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ভূক্তভোগী নারী জানান, পঞ্চগড়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন ওই গৃহবধূ। শুক্রবার রাতে ইজিবাইকে অসুস্থ দুই বছরের ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি। পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের তিনমাইল সুরিভিটা এলাকায় পৌঁছালে ইজিবাইকটির পেছনে থাকা আরেকটি ইজিবাইকচালক তার নাম ধরে ডাকেন এবং থামতে বলেন। ইজিবাইক থামিয়ে স্থানীয় জনিসহ কয়েকজন যুবক জোর করে তাকে সড়কের পাশে একটি চা-বাগানে নিয়ে যান। সেখানে সঙ্গে থাকা দুই বছরের ছেলের গলায় ছুরি ধরে ওই গৃহবধূকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে তারা। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূ অচেতন হয়ে পড়লে তাকে সড়কের পাশে ফেলে পালিয়ে যান ধর্ষকরা। পরে ৯৯৯-এ খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে সদর থানার পুলিশ।
ভূক্তভোগী নারী অভিযোগ করেন, তার ছোট্ট ছেলের গলায় ছুরি ধরেছিল ধর্ষকরা। এ সময় একে একে ছয়জন তাকে ধর্ষণ করে। তাদের মধ্যে চারজন পরিচিত এবং দুইজন অপরিচিত।
তিনি বলেন, ধর্ষণের শিকার হওয়া আমাকেই এখন আমার কাছের লোকজন আপসের জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আবুল কাশেম বলেন, রাতে পুলিশ অচেতন অবস্থায় একজন নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। ধর্ষণের বিষয়টি পরীক্ষার পরে জানা যাবে। আপাতত তিনি শারীরিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ হিল জামান বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন কল পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল পৌঁছে। সেখানে অচেতন অবস্থায় এক নারী এবং তার সঙ্গে থাকা একটি দুই বছরের শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নারীর জ্ঞান ফিরে এলে তিনি ধর্ষণ ঘটনার বিস্তারিত জানান। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।