চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে তিন কিশোরকে চোর সন্দেহে বেঁধে পেটানো হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলেই এক কিশোর নিহত হয়েছে।
শুক্রবার ভোরে ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চেইঙ্গার সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের ধারণা, পূর্বের বিরোধ থেকে চোর সন্দেহের নাটক সাজিয়ে পেটানো হয়েছে।
নিহত কিশোরের নাম মো. রিহান মহিন (১৫)। সে একই গ্রামের সাগর আলী তালুকদার বাড়ির মুদিদোকানি মুহাম্মদ লোকমানের ছেলে।
তার পরিবারের বরাত দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই কিশোর দুই বন্ধুসহ এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফিরছিল। পরে পরিকল্পিতভাবে ‘মব’ করে তাদের পেটানো হয়েছে। এ ঘটনায় রিহানের দুই সমবয়সী বন্ধু মুহাম্মদ মানিক ও মুহাম্মদ রাহাত গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ জানায়, নিহত রিহান বাবার মুদিদোকানে সহযোগী হিসেবে কাজ করত। গতকাল তারা চট্টগ্রাম শহরে বেড়াতে যায়। রাতে তারা বাড়ি ফিরছিল। রাত ৩টার দিকে বাড়ির কাছে এলে আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা সাত থেকে আটজন যুবক তাদের চোর আখ্যা দিয়ে ধাওয়া দেন। এরপর তিন কিশোর দৌড়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে যুবকেরা ধরে তাদেরকে সেতুর উপরে আনেন। এরপর তিন কিশোরকে রশি দিয়ে বেঁধে ‘মব’ করে বেধড়ক মারধর করেন তারা। এতে ঘটনাস্থলেই রিহানের মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা গুরুতর আহত মানিক ও রাহাতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। আর দুপুরে রিহানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আহমদ বলেন, ওই তিন কিশোর বেড়াতে গিয়ে মধ্যরাতে বাড়ি ফিরছিল। কেন, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। পরিবারকে মামলা করতে বলা হয়েছে। পুলিশ মূল হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।
ওসি বলেন, একই গ্রামের যুবকেরা হামলা করায় এটিকে গণপিটুনি বা চোর সন্দেহ মনে হচ্ছে না। তাদের মধ্যে হয়তো কোনো বিরোধ বা শত্রুতা থেকে এ ঘটনার সূত্রপাত হতে পারে।