মিরপুর টেস্টে বড় জয় পেল বাংলাদেশ

মিরপুর টেস্টের চতুর্থ দিনই জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিল বাংলাদেশ। পঞ্চম দিনে এসে সেটা হয়ে দাঁড়ায় জয়ের অপেক্ষা। তবে বাংলাদেশের অপেক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কার্টিস কাম্ফার। দিনের দ্বিতীয় দ্বিতীয় সেশনে এসে তার লড়াই থামিয়ে ২১৭ রানের বিশাল জয় তুলে নিল বাংলাদেশ।

মিরপুরের উইকেটে সচরাচর পাঁচ দিনে টেস্ট গড়ায় খুব কম। সবশেষটিও হয়েছিল ২০২২ সালের মে মাসে। তিন বছরের বেশি সময় পর আবারও পাঁচ দিনে গড়াল সাদা পোশাকের লড়াই। সিলেটে ইনিংস ব্যবধানে জয় দেখা বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট শেষ করল ২-০ ব্যবধানে।

নেতৃত্বে নতুন করে ফিরে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও সিরিজটি রাঙালেন জয় দিয়ে। এবার অপেক্ষা টি-টোয়েন্টির, যা শুরু চট্টগ্রামে।

রবিবার টেস্টের পঞ্চম দিন স্কোরবোর্ডে ৬ উইকেটে ১৭৬ রান নিয়ে দিন শুরু করে আয়ারল্যান্ড। ৩৩৩ রানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল দ্রুতই অতিথিদের গুঁড়িয়ে দেওয়া।

তবে সেই লক্ষ্যে সফল হতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম আধা ঘণ্টা দাপট দেখায় আগের দিনের কার্টিস ক্যাম্ফার ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের জুটি। দিনের ১২তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। ম্যাকব্রাইনকে এলবির ফাঁদে ফেলে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে আড়াইশ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। ৫৩ বলে ২১ রান করে ফেরেন ম্যাকব্রাইন।

জুটি ভাঙার পর স্বস্তি ছিল না বাংলাদেশ শিবিরে। লোয়ার অর্ডারে নেমে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন জর্ডান নিলও। ৩০ রান করে তিনি ফিরলে লড়াই টিকিয়ে রাখেন ক্যাম্ফার। তার লড়াইয়ে ঢাকা টেস্ট গড়ায় দ্বিতীয় সেশনে। সেখানেও তিনি ছিল দুরন্ত। ছুটছিলেন সেঞ্চুরির পথে। অবশেষে তার সতীর্থদের ফিরিয়ে আইরিশদের ইনিংস ২৯১ রানে থামায় বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে ৭১ রানে অপরাজিত ছিল কাম্ফার। খেলেন ২৫৯টি বল!

তাছাড়া আজ না জিতলেও মিরপুর শেরেবাংলায় চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করা সফরকারী দল বনে গিয়েছে আইরিশরা। চতুর্থ ইনিংসে ২৯১ রান করে ইতিহাসে নাম লিখে গেল আইরিশরা।

চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ১০৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তাইজুল। মোট দুই ইনিংস মিলিয়ে তার শিকার ৮টি উইকেট। দুই ইনিংসে ৬টি শিকার হাসান মুরাদের। দুই ইনিংসে ৩টি নেন খালেদ আহমেদ।

এর আগে ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন আয়ারল্যান্ডকে ফলোঅনে পাঠানোর সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। সেটা না করে আইরিশদের ৫০৯ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দেন নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

শনিবার ১ উইকেটে ১৫৬ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। সেখান থেকে নিজেদের সংগ্রহ নিয়ে যায় ৪ উইকেটে ২৯৭ রানে। তাতে লিড দাঁড়ায় ৫০৮ রান। ভাবা হচ্ছিল, মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরির পর ইনিংস ঘোষণা করবে বাংলাদেশ।

তবে সেটা হয়নি। ১১৮ বলে ৮৭ রানে মুমিনুল সাজঘরে ফিরলে ইনিংস ঘোষণা দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত। সে সময় মুশফিক অপরাজিত ৫৩ রানে। নিজের শততম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি না হলেও ফিফটি করে রিকি পন্টিংয়ের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেন মুশফিক। বিশ্বের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে কেবল পন্টিং আর মুশফিকই নিজের শততম টেস্টের দুই ইনিংসে পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসের দেখা পেয়েছেন।

তার আগে এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে মুশফিক ও লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে ৪৭৬ রান করে বাংলাদেশ। বিপরীতে প্রথম ইনিংসে আইরিশরা তোলে ২৬৫ রান। তাতে ২১১ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। যা বাংলাদেশের জয়ে পথ সোজা করে দেয়।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025