মেসির হারের দিনে নেইমার জাদুতে জিতল সান্তোস

একই রাতে ভিন্ন দুই প্রতিযোগিতায় মাঠে নেমেছিল লিওনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়রের ক্লাব। টানা ৫ ম্যাচে জোড়া গোল করে ছন্দে থাকা মেসি এদিন থাকলেন গোলহীন। বড় ব্যবধানে হেরে গেছে তাঁর দল ইন্টার মায়ামি। অন্যদিকে নেইমারের গোলে জয় পেয়েছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোস।

বিধ্বস্ত মেসির মায়ামি

সিনসিনাটির কাছে ৩-০ ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়েছে ইন্টার মায়ামি। গত সাত ম্যাচে ১১ গোল করা মেসিও এবার থেমে গেলেন। ম্যাচজুড়ে কয়েকবার চেষ্টা করলেও গোলের দেখা মেলেনি। দূরপাল্লার এক বারোনো শট ছাড়া উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারেননি।

ম্যাচের ২০ মিনিটেই লুকা ওরেল্লানোর পাস থেকে গোল করে সিনসিনাটিকে এগিয়ে দেন জেরার্ডো ভালেনজুয়েলা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হতেই মায়ামির রক্ষণভাগ আবারও ভেঙে পড়ে। এবার গোলদাতা ব্রাজিলিয়ান তারকা ইভান্ডার, যিনি সার্জিও বুসকেটসকে সরিয়ে নিজের জায়গা বানিয়ে নেন এবং জালে পাঠিয়ে দেন বল।

৭০ মিনিটে স্কোরলাইন হয়ে যায় ৩-০। মূল গোলরক্ষক অস্কার উস্তারির চোটের পর বদলি হয়ে আসা রোকো রিওস নোভোর ভুলে ফের সুযোগ পান ইভান্ডার, এবারও তিনি ভুল করেননি।

ম্যাচ শেষে স্পষ্ট, এই দলের মাঝমাঠ ও রক্ষণে অনেক ঘাটতি রয়েছে — যেটা হয়তো দে পলের মতো একজন খেলোয়াড় পূরণ করতে পারেন।

আগামী সপ্তাহেই নিউইয়র্ক রেড বুলসের বিপক্ষে ম্যাচ। তার আগেই এই হার ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে হবে মেসি ও মায়ামিকে। আর তারও আগে হয়তো নিশ্চিত হবে দে পলের আগমন — যে খবরে ভরসা রাখছে ক্লাব ও সমর্থকরা।

নেইমারের গোলে সান্তোসের জয়

দীর্ঘদিন চোটের সঙ্গে লড়াই করে আবার মাঠে ফিরেছেন নেইমার। ফেরার আনন্দটা আরও বড় করলেন পুরনো ক্লাব সান্তোসের জার্সিতে নাটকীয় এক জয়ের নায়ক হয়ে।

বুধবার রাতে ব্রাজিলিয়ান সেরি আ লিগে শীর্ষে থাকা ফ্লামেঙ্গোর বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় পেয়েছে সান্তোস। আর ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেওয়া একমাত্র গোলটি এসেছে নেইমারের পা থেকে, ম্যাচের ৮৪তম মিনিটে।

ঘরের মাঠে গিলহারমের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে দুর্দান্ত টার্ন নেন নেইমার। তারপর যা করার, তা যেন তার পুরনো দিনের সেই ক্লাসিক নেইমার স্টাইলে; সোজা বল জালে। এই ম্যাচেই তৃতীয়বারের মতো শুরুর একাদশে খেলতে নামেন তিনি, ইনজুরির পর দীর্ঘ বিরতি শেষে।

গত বছর অক্টোবরে উরুগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে বাঁ হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেলে মাঠের বাইরে চলে যান নেইমার। প্রায় এক বছর পর আবার মাঠে ফেরা তার জন্য যেমন কঠিন ছিল, তেমনি প্রত্যাবর্তনটাও হলো গৌরবের।

ম্যাচ শেষে নেইমার বলেন, ‘আমি এখনো পুরোপুরি ফিট নই। তবে উন্নতি করছি। প্রতিটি ম্যাচেই আমি পুরো ৯০ মিনিট খেলতে চাই। সেটা করতে গেলে নিয়মিত ম্যাচ ও অনুশীলনের প্রয়োজন আছে। ’

সান্তোসের হয়ে জয়ের আনন্দ যতটা, প্রতিপক্ষ হিসেবে যে দলটিকে হারাল তারা, সেটিও কম নয়। কারণ, ফ্লামেঙ্গো এই মুহূর্তে লিগের সেরা দল। সমান ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে এখনো শীর্ষেই রয়েছে তারা। ১৩ ম্যাচ শেষে ১৪ পয়েন্ট পাওয়া সান্তোস উঠে এসেছে টেবিলের ১৩তম স্থানে।

প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান রেখেই নেইমার বলেন, ‘ফ্লামেঙ্গো সত্যিই দুর্দান্ত দল। আক্রমণ-রক্ষণ দুই দিকেই তারা ভারসাম্য রেখে খেলে। তবে আজ আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, আমরা যেই অবস্থানে আছি, তার চেয়ে অনেক ভালো দল। ’

দীর্ঘদিন পর মাঠে ফিরে এমন পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে নেইমার ও তার ভক্তদের জন্য বড় স্বস্তির খবর।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025