লন্ডনে বঙ্গবন্ধুর ৫০ তম শাহদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন

বঙ্গবন্ধুর ৫০তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে লন্ডনে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমির

তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশই প্রথম দেশ, যেখানে দেশের মানুষ নিজেরাই নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংবিধানে হাত দেওয়ার কোনো বৈধতা নেই

ব্যারিস্টার তানিয়া আমির আরও বলেন, “ঐক্যমতের নামে যারা আগামী সংসদের হাত-পা বেঁধে দিচ্ছে, তারা ভুল করছে। কারণ, যারা ভবিষ্যতে নির্বাচিত হবেন, তারাই এই সংস্কারগুলো করবেন। একটি স্বাধীন সংসদ কী করবে বা কী করবে না, তা আগাম কেউ নির্দেশনা দিতে পারে না।”

লন্ডনে বঙ্গবন্ধু এবং শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এবং আলোচকবৃন্দ


স্বাধীন নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভূক্তি মূলক নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশে কোন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না, লণ্ডনে ভয়েজ ফর হিউম্যান ডিগনিটি নামে মানবাধিকার সংগঠনের আলোচনায় এই মন্তব্য করেন তিনি।

আলোচকদের আলোচনায় বলা হয়, একটি গোষ্টী যেমন চাইছে বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাসের পাতা থেকে চিরতরে মুছে ফেলতে, অনুরোপভাবে আরেকটি পক্ষ সবসময় চেয়েছে বঙ্গবন্ধুকে তাদের একক সম্পত্তি হিসেবে পরিণত করতে। বঙ্গবন্ধু কারো একক সম্পত্তি নয়, তিনি বাংলাদেশের অস্থিত্ব। বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালী এবং বাংলাদেশের সম্পদ। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ-মুক্তিযুদ্ধ এবং ৭২-এর সংবিধানের যেমন অস্থিত্ব থাকে না, থাকেনা স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব। বঙ্গবন্ধু সবার ঊর্ধ্বে, এক কথায় ‘‘বঙ্গবন্ধুতেই শক্তি, বঙ্গবন্ধুতেই মুক্তি‘‘।

উপস্থিত প্রধান অতিথির সাথে আলোচকবৃন্দ
উপস্থিত শ্রোতাদের একাংশ

বঙ্গবন্ধুর ৫০তম শাহাদাত বার্ষিকীতে ‘ভয়েস ফর হিউম্যান ডিগনিটি‘ নামের একটি মানবিক সংগঠন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট ও বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে বিষয় ভিত্তিক আলোচনায় আলোচকবৃন্দ এসব কথা বলেন।

বিষয় ভিত্তিক আলোচনায় আলোচকরা বলেন পকিস্তানের ২৩ বছরের মধ্যে ১৭ বছরই তাকে বাঙ্গালীর অধিকার এবং বাংলাদেশের মুক্তির জন্য কারাগারে থাকতে হয়েছে। একজন অবিসংবাদী নেতা হিসেবে যেমন তিনি অত্যন্ত সুকৌশলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছেন, ঠিক তেমনি স্বাধীনতার আড়াই মাসের মধ্যে মিত্রবাহিনীকে সদ্য স্বাধীন দেশ থেকে বিদায় করেছেন। স্বাধীনতার এক বছরের ভেতর বিশ্বের একটি শ্রেষ্ঠ সংবিধান জাতিকে উপহার দিয়েছেন। ৭২-এর সংবিধান বিশ্বের অন্যতম একটি শ্রেষ্ঠ সংবিধান। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতের একটি রায়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করে একটি রায় দেয়া হয়েছে। আলোচকরা বলেন ৭২-এর সংবিধান নিয়ে ছিনিমিনি করা চলবেনা।

গত ১২ আগষ্ট ২০২৫ মঙ্গলবার লন্ডন সময় সন্ধ্যা ছয় ঘটিকায়, পূর্ব লন্ডনের মাইক্রো বিজনেন্স সেন্টারে সেমিনারের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের পক্ষ থেকে সাংবাদিক গবেষক সুজাত মনসুর। এরপর ১৫ই আগষ্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সংগঠনের সদস্য তওহিদ ফিতরাত হোসেন ও সৈয়দ তাহমিম হোসেনের যৌথ সঞ্চালনায় বিষয় ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেন ব্যারিষ্টার তানিয়া আমির, মুক্তিযুদ্ধ কালীন ডাকসুর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান, লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাবেক প্রেস মিনিষ্টার সাংবাদিক গবেষক, আন্তর্জাতিক অনলাইন পোর্টাল প্রোটেক্ট বাংলাদেশের সম্পাদক আশেকুন নবী চৌধুরী, লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাবেক প্রেস মিনিষ্টার সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান, ব্যারিষ্টার জয়নাল আবেদিন এবং কবি সাংবাদিক হামিদ মোহাম্মদ

আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে চলে কবিতা আবৃত্তি, এতে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি সাংবাদিক জুয়েল রাজ, কবি ইকবাল হোসেন, কবি এ.কে.এম আব্দুল্লাহ, ভয়েস ফর হিউম্যান ডিগনিটির সদস্য বাচিক শিল্পি শিব্বির আহমেদ শুভ, বাচিক শিল্পি ফয়েজ নূর, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও টিভি উপস্থাপক উর্মি মাজহার ও কবি ময়নুর রহমান বাবুল। সমাপনি বক্তব্য রাখেন ভয়েস ফর হিউম্যন ডিগনিটির সদস্য রাজনৈতিক বিশ্লেষক হরমুজ আলী। লন্ডনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই সেমিনারে সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিশিষ্ট জনেরা অংশ নেন।

Tags :

Juyel Raaj

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025