ফুটবলের মহাতারকা লিওনেল মেসির কলকাতা সফর ব্যাপক বিশৃঙ্খলায় পণ্ড হয়ে গেছে। যুবভারতী স্টেডিয়ামে জমায়েত হাজারও মানুষ মেসিকে ‘ঠিকমতো দেখতে’ না পাওয়ার ক্ষোভ থেকে চেয়ার ও বোতল ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু করে। শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তাজনিত কারণে আয়োজকরা মেসিকে দ্রুত স্টেডিয়াম থেকে সরিয়ে নেন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে টিকিটের দাম পাঁচ থেকে ২৫ হাজার রুপি পর্যন্ত রাখা হয়েছিল। তবে উপস্থিত বহু দর্শকের অভিযোগ, তারা ঠিকভাবে ফুটবল মহাতারকাকে দেখতেই পাননি। নিরাপত্তাকর্মী ও অন্যান্য অতিথিরা মেসিকে একদম ঘিরে রাখায় গ্যালারি থেকে তাকে স্পষ্টভাবে দেখা সম্ভব হয়নি।
মেসি বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে পৌঁছান এবং আনুমানিক ২০ মিনিট সেখানে অবস্থান করেন। ২০২২ বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলারের পুরো স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ করার কথা থাকলেও বিশৃঙ্খলার কারণে তা আর সম্ভব হয়নি।
আর্জেন্টাইন মহাতারকা মাঠে উপস্থিত হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বলিউড তারকা শাহরুখ খান, ভারতের ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকলেও কেউই শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেননি। বিশৃঙ্খলার মধ্যেই অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হয়।
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে ওঠে যে, আয়োজনের উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত ও নিরাপত্তাকর্মীরা মিলে মেসিকে দ্রুত সল্টলেক স্টেডিয়াম থেকে সরিয়ে নেন। একই সময়ে কয়েকজন দর্শক মাঠে ঢুকে পড়ে এবং অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা ক্যানোপিগুলো ভাঙচুর করে।
এনডিটিভিকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এক দর্শক পুরো ঘটনাকে “চরম লজ্জাজনক” বলে অভিহিত করেন। আরেকজন সরাসরি চরম অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করেন।
ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, আজ সল্টলেক স্টেডিয়ামে যে অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে, তাতে আমি গভীরভাবে মর্মাহত ও স্তম্ভিত। হাজার হাজার ক্রীড়াপ্রেমী ও সমর্থকের সঙ্গে আমিও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলাম।
তিনি আরও লেখেন, এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে লিওনেল মেসি, সকল ক্রীড়াপ্রেমী ও তার ভক্তদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আশিস কুমার রায়ের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সদস্য থাকবেন। এই কমিটি ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করবে, দায়িত্ব নির্ধারণ করবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে সুপারিশ করবে।
সূত্র: এনডিটিভি




