অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের মামলায় আলোচিত ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। সেই কারাদণ্ড থেকে তাকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই মামলায় আরো সাতজনকে চার বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্ট তাদেরও খালাস দিয়েছেন। এই সাতজনই জি কে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে পরিচিত।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল মঞ্জুর করে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালতে আপিলের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী পারভেজ হোসেন, মো. জাহিদ হোসেন দোলন, মো. জোবায়ের হোসেন সজিব ও মো. জিয়াউর রশিদ টিপু।
রায়ের পর আইনজীবী পারভেজ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল মঞ্জুর করে মামলার সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।’
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর জি কে শামীমের উত্থান ঘটে। তিনি নিজেকে যুবলীগ নেতা দাবি করলেও যুবলীগ তখন তা অস্বীকার করে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলার সময় ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নিকেতনের বাসা থেকে জি কে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ভবন থেকে এক কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার ১০টি এফডিআর, ৩২টি ব্যাংক হিসাবের চেক বই, আটটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানানো হয় অভিযান শেষে। পরে ২১ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করেন র্যাব-১-এর নায়েব সুবেদার মিজানুর রহমান।
মামলায় বলা হয়, শামীম তার দেহরক্ষীদের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় টার্মিনাল, গরুর হাট-বাজারে চাঁদাবাজি করে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের মালিক হয়েছেন। বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশেও পাচার করেন তিনি। তদন্ত শেষে অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু সাঈদ ২০২০ সালের ৪ অগাস্ট আদালতে জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। সেটি গ্রহণ করে ১০ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করেন আদালত।
বিচার শেষে ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই রায় দেন আদালত। রায়ে জি কে শামীমসহ আটজনকে করাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেক আসমিকে সম্মিলিতভাবে ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৪ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন তারা। সেই আপিল মঞ্জুর করে রায় দিলেন উচ্চ আদালত।