ট্রাম্প প্রশাসন আরও ৩৬ দেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দরজা বন্ধ করে দিল। দেশটির পররাষ্ট্র বিভাগের একটি মেমো উদ্ধৃত করে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে চলতি জুন মাসের শুরুতে ১২টি দেশের নাগরিকের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ট্রাম্প প্রশাসন। আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় আরও সাত দেশের ওপর। এবার সেই তালিকা দীর্ঘ হতে পারে।
যদিও এ নিয়ে হোয়াইট হাউস কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
নতুন যে দেশগুলোর নাগরিকের আমেরিকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে, তার মধ্যে ২৫টি আফ্রিকা মহাদেশের। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গী বলে পরিচিত মিসর, জিবুতিও রয়েছে তালিকায়। মধ্য এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্রের ওপরও এই নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, এসব দেশ থেকে প্রায়ই নাগরিকেরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে অবৈধভাবে সেখানে থেকে যায়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন বলছে, ওই মেমোয় সই রয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর। যে দেশগুলোর ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র, সেখানকার রাষ্ট্রদূতের কাছে শনিবার মেমোটি পাঠানো হয়েছে বলেও জানা যায়। তালিকায় থাকা দেশগুলোকে ৬০ দিন সময় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে তাদের জানাতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া মানদণ্ড ও শর্ত তারা গ্রহণ করবে কি না। আগামী বুধবার সকালের মধ্যে জানাতে হবে, এ বিষয়ে প্রাথমিকভাবে তারা কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন বলে আসছে- সে দেশে প্রবেশের জন্য বেশ কিছু মানদণ্ড স্থির করা হয়েছে। যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবা হচ্ছে, তাদের অনেকেই সেই ‘মানদণ্ড’ মানতে ব্যর্থ। এই দেশগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটিতে নাগরিকদের বৈধ পরিচয়পত্র দেওয়ার মতো কোনো কেন্দ্রীয় সরকারই নেই। কিছু দেশে আবার পরিচয়পত্র দেওয়া নিয়ে জালিয়াতি হয়। ওই দেশগুলোর কিছু নাগরিক আমেরিকায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে নাগরিকত্ব কেনেন। তারপর অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। ওই ৩৬টি দেশ ট্রাম্প প্রশাসনের এই সব ‘শর্ত’ যদি না মানে, তবে তাদের ওপর কবে থেকে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে- তা স্পষ্ট নয়।
মেমোয় যে দেশগুলোর নাম রয়েছে সেগুলো হলো- অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুদা, বেনিন, ভুটান, বুরকিনা ফাসো, কাবো ভার্দ, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, জিবুতি, ডোমিনিকা, ইথিওপিয়া, মিশর, গাবন, গাম্বিয়া, ঘানা, আইভরি কোস্ট, কিরঘিজস্তান, লাইবেরিয়া, মালাওয়ি, মৌরিতানিয়া, নাইজার, নাইজেরিয়া, সেন্ট কিটস, নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও টম অ্যান্ড প্রিন্সিপ, সেনেগাল, সাউথ সুদান, সিরিয়া, তানজানিয়া, টোঙ্গা, টুভালু, উগান্ডা, ভানুয়াতু, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।
এর আগে দেশকে ‘সুরক্ষিত রাখতে’ ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ট্রাম্প। আফগানিস্তান, ইরান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো, ইকুয়েটরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হেটি, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের নাগরিকদের ওপরে এই নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। এ ছাড়াও আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে আরও সাতটি দেশের নাগরিকদের ওপর। সেগুলো হলো ভেনেজুয়েলা, বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিয়ন, টোগো ও তুর্কমেনিস্তান। প্রসঙ্গত, প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ইরান ও আফগানিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন ট্রাম্প।