চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় গভীর রাতে যুবদলের দুইপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ গেছে এক যুবকের। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী ও সিটি মেয়র শাহাদাতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সোমবার মধ্যরাতে বাকলিয়া থানার সৈয়দ শাহ রোডের মদিনা আবাসিকের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকের নাম মো. সাজ্জাদ। তিনি তক্তারপুল এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমের ছেলে। তবে আহতদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নিহতের বাবা মোহাম্মদ আলম জানান, তারা পারিবারিকভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রাতে কে বা কারা তার ছেলেকে বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পান।
তিনি বলেন, “আমার ছেলে ডা. শাহাদাতের অনুসারী। রাতে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি ছেলে চলে গেছে।”
তবে কে ফোন করে তার ছেলেকে যেতে বলেছে সে বিষয়ে জানা নেই বলে জানান মোহাম্মদ আলম।
দলীয় সূত্র ও স্থানীয়রা বলছেন, যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ব্যানার খুলে ফেলাকে কেন্দ্র করে বিবাদে জড়ায় চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল নেতা এমদাদুল হক বাদশা ও বোরহান উদ্দিনের অনুসারীরা। প্রথমে বাদশার অনুসারীরা বোরহানের অনুসারিদের ওপর চড়াও হন। দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে সেটি রুপ নেয় অস্ত্রযুদ্ধে। মধ্যরাতে একাধিক গুলির শব্দে ভারী হয়ে ওঠে বাকলিয়া এলাকা।
আহত হওয়া ছাড়াও বেশ কয়েকজন যুবক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এমদাদুল হক বাদশা চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। দখল-চাঁদাবাজির অভিযোগে মাস কয়েক আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। আর বোরহান উদ্দিন নগর ছাত্রদলের সাবেক আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক। বর্তমানে যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয়। তবে তার পদ সম্পর্কে জানা যায়নি।
অবশ্য বিবাদমান বাদশা ও বোরহান গ্রুপের সবাই সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের অনুসারী।
ঘটনার পর ওই এলাকায় বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাজ করে পুলিশের একাধিক টিম। এ বিষয়ে বাকলিয়া থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন জানান, ব্যানার খুলে ফেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। অপরাধীদের ধরতে কাজ করছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এ হত্যার ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
এ নিয়ে চট্টগ্রামে এক মাসে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের তিনজন খুন হলেন। শনিবার রাউজান উপজেলায় প্রতিপক্ষের গুলিতে প্রাণ হারান স্থানীয় যুবদল কর্মী মোহাম্মদ আলমগীর। মাসের শুরুতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের মদুনাঘাটে প্রকাশ্যে ফিল্মিস্টাইলে গুলি করে হত্যা করা হয় বিএনপির কর্মী মুহাম্মদ আবদুল হাকিমকে। ব্যক্তিগত গাড়িতে চট্টগ্রাম শহরে ফেরার পথে একাধিক গুলি করা হয় তাকে।




