সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে ৩ দিনে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার ঘনফুট পাথর লুট হয়েছে, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৬০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় সোমবার রাতে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোনায়েম বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমদ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৭, ৮ ও ৯ আগস্ট রাত ১টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে স্থানীয় চোরাকারবারিরা প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি বারকি নৌকা ব্যবহার করে বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের মাধ্যমে এসব পাথর লুট করে নিয়ে যায়। এতে ১০০ থেকে ১৫০ জন জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে। তবে মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি।
এজাহারে বলা হয়, ২০১৫ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর জাফলং-ডাউকি ও পিয়াইন নদীর মধ্যবর্তী প্রায় ১৪.৯৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। এরপরও সরকারি আইন অমান্য করে নিয়মিতভাবে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন চলছে। সরকার পতনের সুযোগে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও রাতের অন্ধকারে চোরাকারবারিরা নৌকা ও স্থলযান ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ পাথর সরিয়ে নেয়।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি জানান, মামলার তদন্তের জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কারা পাথর লুটের সঙ্গে জড়িত ছিল তা তদন্তে বের করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পুরো জাফলং এলাকা থেকে কয়েকশ কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে। যন্ত্র ব্যবহার করেও পাথর উত্তোলন করা হয়েছে। গত বছরের অক্টোবরে উপজেলা প্রশাসন ১২০ কোটি টাকার পাথর লুটের তথ্য প্রকাশ করে, যার ভিত্তিতে পরিবেশ অধিদপ্তর একটি মামলা দায়ের করে। তবে সোমবার দায়ের করা মামলাটি শুধু জিরো পয়েন্টের পাথর লুটকে কেন্দ্র করে হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী জানান, জিরো পয়েন্ট ছাড়া অন্যান্য এলাকা থেকেও পাথর উত্তোলনের ঘটনায় থানায় জিডি ও মামলা রয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরও আলাদা মামলা করেছে। জিরো পয়েন্টে পাথর লুটের ঘটনায় আগে মামলা না হওয়ায় এবার সেটি করা হয়েছে।