হিমাচলে বিপর্যয় : নিহত ১৯৯, নিখোঁজ ৩৬

ভারতের উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ি রাজ্য হিমাচল প্রদেশে টানা ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে ১৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৩৬ জন। আহত ৩০৪ জনেরও বেশি। বন্ধ হয়ে গেছে ৫শর বেশি সড়ক। ২০টির বেশি জায়গায় ধস নামায় বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের সংকটও চরমে উঠেছে।

রাজ্যের প্রশাসন সূত্র জানায়, গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সোলান জেলা। গত জুন মাসেই ধস ও ঢলের পানিতে মান্ডি জেলা তলিয়ে গিয়েছিল। এখনো সেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। এর মধ্যে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হলো এলাকাটি।

এই দুর্যোগের সময় হিমাচলের কৈলাসপথে তীর্থ করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার এক ব্যক্তির। হুগলির ত্রিবেণির বেণীমাধব তলার বাসিন্দা টোটো চালক রাজীব কুণ্ডু (৩৮) গত ১ আগস্ট গিয়েছিলেন হিমাচলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৈলাস দর্শন করে ফেরার পথে প্রচণ্ড ঠান্ডা, ভারী বৃষ্টি ও অক্সিজেনের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বেস ক্যাম্পে আনার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

উত্তরাখণ্ডেও একইরকম দুর্যোগে বিপর্যস্ত উত্তরকাশির ধরালী গ্রাম। সাড়ে ১২ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার বেগে নেমে আসে ঢলের পানি। বিশাল পাথর আর কাদামাটির স্রোতে ঘরবাড়ি ভেসে যায়। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এলাকাটি।

হিমাচলের কিন্নর জেলার পরিস্থিতিও শোচনীয়। টানা ভারী বৃষ্টি ও ধসে বন্ধ হয়ে গেছে সড়কপথ। কৈলাসযাত্রীদের ৪১৩ জনের একটি দল মাঝপথে আটকে পড়ে। স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে এই পর্যটকেরাও পড়েন চরম দুর্ভোগে। বুধবার সকালে ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিভিপি) ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তাঁদের উদ্ধার করে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমাচল সরকার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার ও পুনর্বাসন কাজ চালাচ্ছে। সেনাবাহিনী, আইটিভিপি, এনডিআরএফসহ সব রকম বাহিনী নামানো হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তরের তরফে হিমাচল ও উত্তরাখণ্ড দুই রাজ্যেই ‘লাল সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা এখনো রয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুকভিন্দর সিং সুখু দুর্গতদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025