জ্ঞান ফিরলেও শঙ্কামুক্ত নন নুর

গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের জ্ঞান ফিরেছে। কিন্তু তিনি এখনও শঙ্কামুক্ত নন। তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড এ তথ্য জানিয়েছে।

শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা জাহিদ রায়হান সাংবাদিকদের বলেন, ‘জ্ঞান ফিরলেও এখনও নূর শঙ্কামুক্ত নন। তাঁর মাথার ভেতরে পানি জমাট বেঁধেছে।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নুরুল হকের মাথায় আঘাত রয়েছে। তাঁর নাকের হাড় ভেঙে গেছে। যে কারণে শুক্রবার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছিল। আগেই রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়েছে। জ্ঞান ফিরেছে। তবে ৪৮ ঘণ্টার আগে নুরুল হক আশঙ্কামুক্ত, সেটি বলা সম্ভব নয়।’

নুরুল হকের চিকিৎসায় শুক্রবার রাতেই সর্বোচ্চ পর্যায়ের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বলে জানান মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান আজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নুরুল হককে দেখতে যান। তাঁর চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পার্টি ও গণ-অধিকার পরিষদ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। রাত সোয়া ৮টার দিকে কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে নুরুল হক নুরসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। রক্তাক্ত অবস্থায় নুরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান নেতাকর্মীরা।

নুরুল হক নুরের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে শুক্রবার রাত ১টার দিকে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। চিকিৎসকের বরাতে তিনি বলেন, ‘নুরকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। ডাক্তাররা বলেছেন নূরের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে।’

তিনি বলেন, নূরের কিছু হলে তার দায় সেনাপ্রধান ও প্রফেসর ইউনূসকে নিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেনাপ্রধান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টাকে বক্তব্য পরিষ্কার করতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যারা হামলা করেছেন, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে, নতুবা যমুনা ঘেরাও করা হবে।

রাশেদ বলেন, পুলিশ সেনাবাহিনীর যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারকে পদত্যাগ করতে হবে।

জাতীয় পার্টি ও গণ-অধিকার পরিষদ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত ৯টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলতে থাকে। গণ-অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়কে আগুন জ্বালিয়ে দেন। পুলিশ ও সেনাসদস্যরা উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন।

গণ-অধিকার পরিষদের দাবি, তাদের মিছিলের পেছন থেকে হামলা করেছে জাতীয় পার্টি। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির পাল্টা অভিযোগ, তাদের প্রধান কার্যালয়ে হামলা হয়েছে ওই মিছিল থেকে।

গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ছিলেন এই মিছিলে। এ ঘটনায় রাশেদ খান আহত হয়েছেন বলে তার ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়েছে। মিছিলের ‘হামলার’ প্রতিবাদে মশাল মিছিলের ডাক দিয়েছে গণ-অধিকার পরিষদ।

এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সচিব খন্দকার দেলোয়ার জালালী এক বার্তায় দাবি করেন, জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা’ ঘটেছে।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025