গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার তিন দিন পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। কারফিউ শিথিল থাকায় আজ (শনিবার) লোকজন ও যানবাহন কিছুটা চোখে পড়েছে। তবে জেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে গ্রেপ্তার আতঙ্ক। ফলে পুরুষদের খুব একটা বাইরে দেখা যাচ্ছে না।
পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে মোট চারটি মামলা করা হয়েছে গোপালগঞ্জে। গত দুই দিনে সদর, কাশিয়ানী ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো করে পুলিশ। চারটি মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২ হাজার ৬৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গত বুধবার থেকে আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩০৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জেলার পাঁচটি থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সদর থানায় নতুন ৪৪ জনসহ ৯২ জন, কাশিয়ানী থানায় নতুন ৩৩ জনসহ ৭৭ জন, মুকসুদপুরে নতুন ২২ জনসহ ৮৮ জন, টুঙ্গিপাড়ায় নতুন ১০ জনসহ ২৭ জন ও কোটালীপাড়ায় নতুন ১০ জনসহ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন শুক্রবার রাতেই ঘোষণা করেছিল, কারফিউ শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত শিথিল থাকবে। প্রশাসন বলছে, কারফিউ শিথিলের ফলে জনজীবন অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে।
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন সরকার বলেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে দুষ্কৃতকারীদের খোঁজে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
যদিও কোথাও কোথাও বাজার করতে আসা নারীরা বলছেন, গ্রেপ্তার আতঙ্ক থাকায় তারা তাদের বাড়ির পুরুষ সদস্যদের বাজারে আসতে দেননি।
তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন সরকারের দাবি, সাধারণ কোনো মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই তারা কাজ করছেন।