ঘরে ঢুকে সৌদি প্রবাসীর বাবা ও স্ত্রীকে হাত-পা, মুখ বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার আগে ওই নারীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’ করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করলেও কিছু নেয়নি তারা।
মঙ্গলবার গভীর রাতে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমণ্ডপ পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ জোড়া খুনের ঘটনায় পুরো গ্রামে শোক ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
নিহতরা হলেন- জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমণ্ডপ পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত পানাউল্লাহ পচার ছেলে আফতাব হোসেন (৭০) ও তার সৌদি প্রবাসী ছেলে শাহজাহান আলীর স্ত্রী রিভা আকতার (৩০)।
স্থানীয়রা জানান, শাহজাহান আলী সৌদি আরবে চাকরি করেন। লক্ষ্মীমণ্ডপ পূর্বপাড়া গ্রামের বাড়িতে তার বৃদ্ধ বাবা আফতাব উদ্দিন, স্ত্রী রিভা আকতার ও সাত বছরের মেয়ে বসবাস করেন। মঙ্গলবার রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর এক ঘরে মা-মেয়ে ও অন্য ঘরে আফতাব উদ্দিন ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের কোনো এক সময়ে চারজন দুর্বৃত্ত ওই বাড়িতে ঢোকে। তারা বৃদ্ধ আফতাব উদ্দিন ও ছেলের বউ রিভা আকতারের হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। এরপর দুইজনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। দুর্বৃত্তরা ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করলেও টাকা, গহনা বা অন্য কিছু নেয়নি। তারা শিশুটিকেও কিছু করেনি। শিশুটি শুধু বলতে পারছে, বাড়িতে চারজন দুর্বৃত্ত ঢুকেছিল। স্থানীয়দের ধারণা, হত্যার আগে দুর্বৃত্তরা গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটির কান্নার আওয়াজে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে লাশ দেখেন। খবর পেয়ে দুপচাঁচিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
দুপচাঁচিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার আলহাজ উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে হত্যার আগে গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছে। প্রতিবেশী নারীদের দিয়ে সুরতহাল করানোর সময় তারা গৃহবধূকে ধর্ষণের আলামত পেয়েছেন। ডাক্তারি রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম জানান, সৌদি প্রবাসী শাহজাহান আলীর বাবা ও স্ত্রীকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। বৃদ্ধের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘর থেকে কিছু লুটের তথ্য পাওয়া যায়নি। ধর্ষণ করা হয়েছে কি না তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে শত্রুতা, পারিবারিক বিরোধ বা চুরি-ডাকাতির বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত চলছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও থানা পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।