গাজায় ইসরায়েলের ‘গণহত্যা’র প্রতিবাদ জানিয়ে সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির একটি শুনানিতে বাধা দেওয়ায় দুই সাবেক মার্কিন সেনাসদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনা গাজায় চলমান যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন সামরিক ও প্রাক্তন সামরিক মহলে অসন্তোষ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি সামনে এনেছে।
মূল ঘটনা:
গাজা মানবিক ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) হুইসেলব্লোয়ার অ্যান্থনি আগুইলার এবং মার্কিন সেনাবাহিনীর সাবেক গোয়েন্দা বিশ্লেষক জোসেফিন গিলবো শুনানিতে বাধা দেন। তারা চিৎকার করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার ‘সহযোগী’।
ইসরায়েল-পন্থী লবিং গ্রুপ থেকে ২,৫০,০০০ ডলারের বেশি অনুদান পাওয়া সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জেমস রিশ প্রতিবাদকারীদের দেখে চিৎকার করে ওঠেন, “অফ টু জেল” (জেলে যাও)।
আগুিলারকে যখন হাতকড়া পরানো হচ্ছিল, তখন তিনি বলেন, “মার্কিন কংগ্রেস শিশুদের মৃত্যুর জন্য অর্থ দিচ্ছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “যখন মার্কিন কংগ্রেস অভিজ্ঞদের পেছনে লাগে, তখন তারা আপনাদের পেছনেও লাগবে। ঘরে বসে থাকা প্রত্যেক আমেরিকানকে উপলব্ধি করতে হবে যে, আপনারা গণহত্যার জন্য অর্থ দিচ্ছেন।”
অন্যদিকে, জোসেফিন গিলবোকে হাতকড়া পরানোর সময় তিনি বলেন, ”rise up, rise up America…” জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, জেগে উঠো আমেরিকা, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর এখনই সময়।


হুইসেলব্লোয়ারের অভিযোগ
অ্যান্থনি আগুইলার, যিনি একজন সাবেক গ্রিন বেরেট, গাজায় জিএইচএফ-এর একজন ঠিকাদার হিসেবে কাজ করতেন। তিনি গুরুতর অভিযোগ করে বলেন যে, জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলো ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশে ইচ্ছাকৃতভাবে “ডেথ ট্র্যাপ” বা মৃত্যুফাঁদ হিসেবে বানানো হয়েছিল।
তিনি আরও দাবি করেন নিজের চোখে এমন একটি ঘটনা দেখেছেন যে, এসব ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনী বেসামরিক মানুষের ওপর গুলি চালাতো।
আগুিলার আরও জানান, জিএইচএফ-এর সহযোগী সংস্থা ইউজি সলিউশনস-এর মালিক ফিলিপ রেইলি একজন সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা।
অন্যদিকে, জিএইচএফ আগুইলারের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের মতে, আগুইলার একজন অসন্তুষ্ট প্রাক্তন কর্মচারী এবং তার অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, ক্রিস ভ্যান হলেন এবং পিটার ওয়েলচ জিএইচএফ-এর কার্যক্রম সম্পর্কে স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাছে একটি তদন্ত চেয়েছেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানান, জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম মানবিক নীতির লঙ্ঘন।