শিশুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গুরুতর সহিংসতার দায়ে জাতিসংঘ দ্বিতীয় বছরের মতো ইসরায়েলকে ‘কালো তালিকায়’ অন্তর্ভুক্ত করেছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে জাতিসংঘ বলেছে, ২০২৪ সালে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শিশুদের ওপর সহিংসতা ‘নজিরবিহীন মাত্রায়’ পৌঁছেছে। আর শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে গাজা উপত্যকা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে। ইসরায়েলি বাহিনীই এসব ঘটনার জন্য দায়ী।
‘চিলড্রেন ইন আর্মড কনফ্লিক্ট’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর বিশ্বব্যাপী শিশুদের ওপর গুরুতর সহিংসতা ২৫ শতাংশ বেড়েছে। এতে বলা হয়েছে, ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিরুদ্ধে ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতার তথ্য যাচাই করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যা ও অঙ্গহানি, যৌন সহিংসতা, স্কুল ও হাসপাতালের ওপর হামলার ঘটনা। এসব ঘটনার মধ্যে শুধু অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ও ইসরায়েলে ২ হাজার ৯৫৯ শিশুর ওপর ৮ হাজার ৫৫৪টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এগুলোর মধ্যে ২ হাজার ৯৪৪টি ফিলিস্তিনি শিশু ও ১৫টি ইসরায়েলি শিশু।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় ১ হাজার ২৫৯ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত ও ৯৪১ শিশু আহত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর এই সহিংসতা শুরু হয়েছিল। ওই দিন থেকে ইসরায়েল গাজায় টানা নৃশংস ও নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ বলেছে, পূর্ব জেরুজালেমসহ অধিকৃত পশ্চিম তীরে ৯৭ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হওয়ার তথ্যও তারা পেয়েছে। সেখানে শিশুদের ওপর সহিংসতার মোট ৩ মোট ৬৮৮টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে লেবাননে ইসরায়েলের চালানো হামলার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে গত বছর পাঁচ শতাধিক শিশু নিহত বা আহত হয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ও ইসরায়েলে শিশুদের ওপর এত মাত্রায় গুরুতর সহিংসতার ঘটনায় আমি মর্মাহত। জনবহুল এলাকায় বিস্ফোরক অস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার ভয়াবহ ছিল।
গুতেরেস আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যেখানে শিশুদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ নিয়ম রয়েছে, স্কুল ও হাসপাতাল রক্ষার কথা বলা হয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। যেকোনো সামরিক হামলায় সাধারণ জনগণের ক্ষতি এড়াতে হবে।
ইসরায়েলের জাতিসংঘ মিশন অবশ্য এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।