বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসরগুলোর একটি ‘মিস ইউনিভার্স’-এর ৭৪তম আয়োজন অনুষ্ঠিত হলো থাইল্যান্ডে। আর সেখানে মুকুট জিতলেন মেক্সিকোর প্রতিযোগী ফাতিমা বশ।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) রাতে থাইল্যান্ডে ২ নভেম্বর শুরু হওয়া এবারের প্রতিযোগিতা ছিল নানা নাটকীয়তায় ভরা। প্রতিযোগিতার একেবারে শুরুতেই বৈঠকের সময় সঞ্চালকের কঠোর কটূক্তির শিকার হয়েছিলেন ফাতিমা। অথচ সেই অপমানই যেন তাঁর এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়।
গতবারের মিস ইউনিভার্স, ডেনমার্কের ভিক্টোরিয়া ক্যায়ের থেইলভিগের হাত থেকে মুকুট গ্রহণ করেন ফাতিমা। এই প্রতিযোগীতায় রানারআপ হয়েছেন আয়োজক দেশ থাইল্যান্ডের প্রাভিনার সিংহ। ২৬ বছর বয়সী ফাতিমা বশের মাধ্যমে মেক্সিকোর ইতিহাসে চতুর্থবারের মত ‘মিস ইউনিভার্স’ শিরোপা জয়ী হলো।
মিস ইউনিভার্সের এবারের আসরে প্রথম রানারআপ নির্বাচিত হয়েছেন থাইল্যান্ডের বীণা প্রবিনার সিং। দ্বিতীয় রানারআপ নির্বাচিত হয়েছেন ভেনেজুয়েলার স্টেফানি অ্যাবাসলি, তৃতীয় ও চতুর্থ রানারআপ যথাক্রমে নির্বাচিত হয়েছেন ফিলিপাইনের মা আতিসা মানালো ও কোচ ডি বোয়ার লিভিয়া ইয়াচি।

বিশ্বব্যাপী সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার ‘সুপার বোল’ হিসেবে খ্যাত মিস ইউনিভার্সে এ বছর অংশ নেন ১২০ দেশের প্রতিনিধি। প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন নাদিন আয়ুব; তিনি সেমিফাইনালে পৌঁছালেও শীর্ষ ৩০ থেকে বিদায় নেন।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন মার্কিন কৌতুকশিল্পী স্টিভ বায়ার্ন, উদ্বোধনী পরিবেশনায় ছিলেন থাই তারকা জেফ স্যাচুর।
দীর্ঘ তিন সপ্তাহের যাত্রায় প্রতিযোগীরা থাইল্যান্ড জুড়ে ঘুরে ঘুরে অংশ নেন রিহার্সাল ও নানা ইভেন্টে। বুধবার অনুষ্ঠিত হয় ন্যাশনাল কস্টিউম শোকেস, যেখানে প্রতিযোগীরা নিজেদের দেশের ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলার জন্য পরিধান করেন চোখ ধাঁধানো পোশাক। মিস ইউএসএ অড্রি একার্ট হাজির হন সাইমন ভিলালবার নকশা করা চমকপ্রদ ‘বাল্ড ঈগল’ কস্টিউমে। একইদিন প্রিলিমিনারির সন্ধ্যার গাউন রাউন্ডে ভয়াবহভাবে পড়ে যান জ্যামাইকার গাব্রিয়েল হেনরি, যাকে পরে স্ট্রেচারে করে নেওয়া হয়।
পরে মিস ইউনিভার্স প্রেসিডেন্ট রাউল রোচা জানান, হেনরির কোনো হাড় ভাঙেনি এবং তিনি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে আছেন।
এদিকে বাংলাদেশের গর্বও কম নয়। বিশ্বসুন্দরীর এই মহারণে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলে টপ থার্টিতে জায়গা করে নিয়েছেন দেশের প্রতিনিধি তানজিয়া জামান মিথিলা। অভিষেকের মঞ্চেই এমন সাফল্য বাংলাদেশি দর্শকদের তৈরি করেছে গর্বে-আনন্দে উচ্ছ্বসিত। মিথিলার এই অর্জন শুধু ব্যক্তিগত নয়—বাংলাদেশের সৌন্দর্য, আত্মবিশ্বাস আর আন্তর্জাতিক মঞ্চে উঠে আসা নতুন সম্ভাবনার এক উজ্জ্বল বার্তাও বটে।

মিস ইউনিভার্স ২০২৫ শেষ হলেও বাংলাদেশি ভক্তদের হৃদয়ে রয়ে যাবে মিথিলার দীপ্ত উপস্থিতি এবং আগামীতে আরও বড় সাফল্যের প্রত্যাশা।




