একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার, মিলল চিরকুট

একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামন শিখর এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- মিনারুল ইসলাম, তার স্ত্রী মনিরা বেগম, ছেলে মাহিম এবং দেড় বছর বয়সী মেয়ে মিথিলা। মাহিম খড়খড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

ঘটনাস্থল থেকে মিনারুলের লেখা একটি চিঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ। যেখানে ঋণের চাপে পরিবারের সবাইকে মেরে পরে নিজে আত্মহত্যা করার কথা লিখেছেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, চারজনের মধ্যে উত্তরের ঘর থেকে মা-মেয়ের এবং দক্ষিণের ঘর থেকে বাবা ও ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে মিনারুলের মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে থাকা অবস্থায় পাওয়া যায়।

মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক জানান, মানসিক হতাশা ও ঋণের চাপের কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মরদেহ উদ্ধারের সময় সেখান থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করার কথা জানায় পুলিশ। ওই চিঠিতে মিনারুল লিখেছেন, ‘আমরা চারজন পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছি, আর দেখা হবে না, খোদা হাফেজ। আমি মিনারুল নিচের যেসব কথা লেখব, সব আমার নিজের। চলে জাছি (যাচ্ছি) এই কারণে, আমরা চারজন একসাতে (একসঙ্গে) মারা জাবো (যাবো)। এই মরার জন্য কারও কোনো দোষ নেই।’

চিঠিতে আরও লেখা ছিল, ‘আমি নিজ হাতে সবাকে (সবাইকে) মারলাম এই কারণে যে আমি একা জদি (যদি) মরে যাই তাহলে আমার বো (বৌ), ছেলে, মেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে। কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম রেনের (ঋণের) দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমাদের বেচে (বেঁচে) থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভালো হলো। কারও কাছে কিছু চাইতে হবে (না)। আমার জন্নে (জন্য) কাওকে (কাউকে) মানুষের কাছে ছোট হতে হবে (না)। আমার বাবা আমার জন্য অনেক লোকের কাছে ছোট হয়েছে আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ।’

মিনারুলের শ্বশুর আব্দুল মালেক বলেন, মিনারুল কৃষিকাজ করতো। তার ঋণ ছিল। তারা মাটির ঘরে বসবাস করত।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025